post
এনআরবি বিশ্ব

ভার্জিনিয়ায় একুশে উদযাপনের সব প্রস্তুতি নিয়েছে ডিসি একুশে অ্যালায়েন্স

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে ফেব্রুয়ারি পালনে ব্যাপক প্রস্ততি চলছে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াস্থ বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে। গান গেয়ে, নেচে, আবৃতি করে আরও নানা আয়োজনে তারা উদযাপন করতে চান দিনটি। তৈরি হচ্ছে শহীদ মিনার। যা বসানো হবে অনুষ্ঠানস্থলের মঞ্চে।বাঙালি চেতনাবোধে জাগ্রত মানুষগুলো সুদুর আমেরিকাতে বসে একুশের প্রভাতফেরীর মতো করে খালি পায়ে হেঁটে শহীদ মিনারে ফুল দেবেন। বরাবরের মতো এবারও পুরো আয়োজনটি হচ্ছে ডিসি একুশে অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে। এনআরবিসি টিভির ক্রু ঘুরে দেখে এলো অ্যালায়েন্সের প্রস্তুতি। এখানে বাংলাদেশি কমিউনিটির দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় প্রজন্মের ছেলেমেয়ারাও নিচ্ছে নানান প্রস্তুতি। কেউ নাচের কেউ গানের রিহার্সাল করছে। ভার্জিনিয়াস্থ আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলছে সে রিহার্সাল। আর মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনে কেনমোর মিডল স্কুলে। যুক্তরাষ্ট্রে এবছর দিনটি সপ্তাহের কাজের দিন এবং স্কুল কলেজ খোলার দিনে পড়ে যাওয়ায় মূল আয়োজনটি রাখা হয়েছে ১৯ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) সন্ধ্যায়। করোনা মহামারির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকলে অংশ নেবেন এই আয়োজনে। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরাও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েই পারফর্ম করবেন। একুশে অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে এবারের আয়োজনের মূল সমন্বয়ক সামছুদ্দিন মাহমুদ জানালেন, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। নতুন প্রজন্মের শিশুকিশোররাই হবে এবারের আয়োজনের প্রাণ। দিনটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পালন করতে কমিউনিটির সকলেই এগিয়ে এসেছেন, বললেন তিনি। বিকেল ৫টায় শুরু হবে আয়োজন যা রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে আসবেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম। এছাড়াও কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এতে উপস্থিত হবেন। ভার্জিনিয়াস্থ আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর, পিপলএনটেকের কর্ণধার আবুবকর হানিপ, বিশ্ববিদ্যালয়টির সিএফও ও পিপলএনটেকের প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিপও অংশ নেবেন এই কর্মসূচিতে। কর্মসূচির মিডিয়াপার্টনার হিসেবে থাকছে এনআরবি কানেক্ট টেলিভিশন। বাইটপোর ব্যবস্থাপনায় এবং আরলিংটন আর্টসের সহযোগিতায় ওয়াশিংটন ডিসি, ভার্জিনায় বাংলাদেশি কমিউনিটির ২৩টি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন অংশ নেবে এই আয়োজনে । সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- ওয়ার্ল্ড ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কাউন্সিল, সুন্দরবন, স্বাধীন বাংলাদেশ কালচারাল অর্গানাইজেশন, স্বদেশ, প্রিয় বাংলা, পিপল অ্যান টেক ফাউন্ডেশন, মেরিল্যান্ড ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামিলি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ইন ডিসি, ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামিলি, ফাউন্ডেশন অব সোশ্যাল অরগেনাইজেশন অ্যান্ড লিডারশিপ, একাত্তর ফাইন্ডেশন, ধ্রুপদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ফোরাম, বুয়েটিয়ান ইউএসএ ক্যাপিটাল রিজিয়ন, বাংলাদেশ এ্যান্টারপ্রেনারর্স সোসাইটি অব ট্যালেন্টস (বেস্ট), বাংলাদেশ আমেরিকান আইটি প্রফেশনালস অরগানাইজেশন, বাংলাদেশ আমেরিকান ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ আমেরিকান কালচারাল অরগানাইজেশন অব ডিসি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েট অব গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা, আমরা নারী, আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেক্টস, আমরা বাঙ্গালি ফাউন্ডেশন। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হবে অমর একুশের এই আয়োজনের মূল পর্ব। এরপরপরই '২১ শুধু একটি সংখ্যা নয়, একটি মুক্তির মূলমন্ত্র' এমন কোরাস গানে হবে নৃত্য পরিবেশনা। এরপর একে একে থাকবে ছোটদের একুশে নৃত্য, একুশের কবিতা, একুশে পুঁথিপাঠ। বর্ণমালার প্রজন্ম ভাষা শহীদ ও আজকের প্রজন্মের মধ্যে সেতুবন্ধনে থাকবে বিশেষ আয়োজন। আর থাকবে একটি মাল্টি কালচার পরিবেশনা। আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবসের বিষয়টি মাথায় রেখেই এই অংশটি রাখা হয়েছে এমনটা জানিয়ে সমন্বয়ক সামছুদ্দিন মাহমুদ বলেন, একটি মঙ্গোলীয় ও একটি মেক্সিকান ডান্স গ্রুপ এই অংশে তাদের নাচ পরিবেশন করবে। অনুষ্ঠান শেষ হলে সকলে প্রভাতফেরীর আদলে খালি পায়ে হেঁটে শহীদমিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন ভাষা শহীদদের স্মরণে। আর তার মধ্য দিয়েই শেষ হবে ভার্জিনিয়ায় এবারের ভাষাশহীদ দিবস পালন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন। 

post
এনআরবি বিশ্ব

ওয়াশিংটন ডিসিতে আজ শুরু হচ্ছে বইমেলা

প্রবাসী বাঙ্গালীদের মাঝে বাংলা বই ও সংস্কৃতিকে জনপ্রিয় করে তোলার লক্ষে আজ শনিবার শুরু হতে যাচ্ছে বৃহত্তর ওয়াশিংটন ডিসি তৃতীয় বইমেলা। ভার্জিনিয়ার হলিডে ইন এক্সপ্রেস বলরুমে অনুষ্ঠিতব্য দুদিনব্যাপী বইমেলার এবারের স্লোগান 'বিশ্বজুড়ে বাংলা বই'।এবারের বইমেলার প্রধান সমন্বয়ক আতিয়া মাহজাবিন মিতু জানান, বইমেলা উদ্বোধন করবেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক জাতিসত্তার কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা। এছাড়া সাহিত্যিক ও কবি আসাদ চৌধুরী, অভিনেতা ও আবৃত্তিকার সৈয়দ হাসান ইমাম, লেখক ও গবেষক মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন্নবী, গবেষক ও কবি হাসান মাহমুদসহ প্রখ্যাত কবি এবং বইমেলার প্রধান উপদেষ্টা ও ভয়েস অব আমেরিকা বাংলা বিভাগের সাবেক প্রধান রোকেয়া হায়দার এবারের বইমেলায় উপস্থিত থাকবেন।ঘরে বাংলা চর্চা, বাংলা ভাষায় অবাঙালিদের অবদান, এপার বাংলার সাহিত্য ওপার বাংলার সাহিত্য থেকে স্বতন্ত্র কেন, বাংলা গদ্য সাহিত্যের বর্তমান অবস্থা, বাংলা সাহিত্যে অবাঙালিদের অবদান, কবিতায় ছন্দ তত্ত্ব, বেগম রোকেয়া: প্রথম সার্থক কল্পবিজ্ঞান রচয়িতা, খেলার ছলে পড়া, অজানা একাত্তর, স্থাপত্যের চোখে ভাষা আন্দোলন এবং বাঙালি চেতনা, জনপ্রিয় সাহিত্য বনাম উঁচু মানের সাহিত্য-দেশের সাহিত্য পুরস্কারগুলো বিতর্কের সম্মুখীন কেন ইত্যাদি বিষয়ের ওপর সেমিনারের পাশাপাশি এবারের বইমেলায় প্রায় অর্ধশত লেখক ও কবিদের সাথে তাদের লেখা বই নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।  এছাড়া শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, গান, গানের ছোঁয়ায় কবিতা, কবিতা পাঠ, ক্লেমেন্ট, শব্দ অংকন, মেরি স্টেলা, পুঁথিপাঠ, শ্রুতি নাটক, কবির কণ্ঠে কবিতা, রবীন্দ্র সঙ্গীত, প্রেম ও প্রকৃতিতে রবীন্দ্রনাথ, বাংলা গান, হারানো দিনের সুর, রাগাশ্রয়ী গান, দেশের গান-প্রেমে, দ্রোহে, হৃদয়ে স্বদেশ, আমার বাংলাদেশ প্রদর্শিত হবে। এর পাশাপাশি স্বল্প দৈর্ঘ্য ছবি: দ্রোহ (রিভোল্ট), ডকুমেন্টারি ফিল্ম: একাত্তর, মাতৃভাষা (Mother Tongue), নারী অধিকার নিয়ে নির্মিত স্বল্প দৈর্ঘ্য ছবি 'নারী' এবং একাত্তরের ওপরে নির্মিত ছবি 'নাওফিল' প্রদর্শিত হবে।বৃহত্তর ওয়াশিংটন ডিসি'র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ফোরাম ইনক (ডুয়াফি), বাংলা ইশকুল, বর্ণমালা, বিসিডিডিআই বাংলা স্কুলসহ বিভিন্ন সংগঠন বইমেলায় অংশগ্রহণ করবে।

post
এনআরবি বিশ্ব

যুক্তরাষ্ট্রে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানালো পিপলএনটেক পরিবার

মহান অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সকল ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম আইটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট পিপলএনটেক ফাউন্ডেশন ও এর পরিবার। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতবাসের স্থায়ী শহীদ মিনারে ও আর্লিংটনের কেনমোর মিডল স্কুল মিলনায়তনে ডিসি একুশে অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পৃথকভাবে ফুল দিয়ে এই শ্রদ্ধা জানানো হয়।  পিপলএনটেকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ ও প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিপ এতে নেতৃত্ব দেন। শ্রদ্ধাঞ্জলি দেবার সময় প্রতিষ্ঠানের অন্য কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণার্থীরা অংশ নেন।বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য ৭১ বছর আগে ঢাকায় জীবন উৎসর্গকারী ভাষাসৈনিকদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের স্মরণে দুটি কর্মসূচির আয়োজনই ছিলো অনন্য।২১ ফেব্রুয়ারি দিনব্যাপী এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাস। একুশের প্রথম প্রহরে প্রভাতফেরী ও শহীদ মিনার ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সন্ধ্যায় দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনাযতনে আয়োজন করা হয় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পর্ব। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার তাৎপর্য তুলে ধরতে বিশ্বব্যাপী সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ফুটিয়ে তোলা হয় এই আয়োজনে। যাতে বাংলাদেশসহ ছয়টি দেশের শিল্পীরা একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। এই আয়োজনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশ নেন পিপলএনটেকের চেয়ারম্যান আবুবকর হানিপ ও প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিপসহ অন্য কর্মকর্তারা।অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকবৃন্দ, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন। সকলের সঙ্গে কুশল বিনিমিয়ের পাশাপাশি ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ও ইতিহাসে এর অবস্থান নিয়ে কথা বলেন ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ ও ফারহানা হানিপ। এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার ভার্জিনিয়ার আলিংটন কেনমোর মিডল স্কুলে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন করা হয় ডিসি একুশে অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে।ডিসি ভার্জিনিয়া মেরিল্যান্ডে বাংলাদেশি কমিউনিটর ২৫ টি সংগঠন নিয়ে গঠিত এই অ্যালায়েন্সের অন্যতম সদস্য পিপলএনটেক ফাউন্ডেশন। সেখানেও অনুষ্ঠানস্থলে স্থাপিত অস্থায়ী শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান পিপলএনটেক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, প্রেসিডেন্ট ও অন্য কর্মকর্তারা। এই আয়োজনের অন্যতম পৃষ্ঠপোষকও ছিলো পিপলএনটেক। গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে একুশ উদযাপনের আয়োজনগুলোতে নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছে এই আইটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানটি। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পিএনটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ বলেন, "ভাষা আন্দোলন একদিকে আমাদের জন্য শোকের। কারণ এই ভাষার জন্য বাংলার অনেক দামাল ছেলেকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তবে আজ বিশ্বজুড়ে দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত ও উদযাপিত হয়। বিষয়টি আমাদের জন্য গর্বের।"পিপলএনটেকের প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিপ বলেন, "ভাষা সৈনিকদের প্রাণের বিনিময়ে আমরা আমাদের মাতৃভাষা পেয়েছি, সে সব ভাষা শহীদদের সম্মান জানানো আমাদের যেমন নৈতিক দায়িত্ব তেমনি বিদেশের মাটিতে হলেও সেই ভাষাকে যথাযথ চর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌছে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। তিনি আরও বলেন, আমাদের সন্তানেরা বিদেশের মাটিতে বেড়ে উঠলেও বাংলা ভাষার চর্চাটা তাদের কাছে পৌছে দেয়ার চেষ্টা করছি। সাথে করে নিয়ে এসে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে মাতৃভাষার বিষয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ, উজ্জীবিত করছি।"ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসসহ বাংলাদেশের জাতীয় দিনগুলো যুক্তরাষ্ট্রে পালন ও উদযাপনের সকল আয়োজনেই পিপলএনটেকের অংশগ্রহণ ও পৃষ্ঠপোষকতা থাকে। বিগত কয়েক বছরের মতো এবছরও ডিসি একুশে অ্যালায়েন্স সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রস্তুতি, সাংস্কৃতিক পর্বের মহড়া সম্পন্ন হয়েছে পিপলএনটেকের কার্য্যালয়ের অডিটোরিয়ামে।এ প্রসঙ্গে পিপলএনটেকের প্রতিষ্ঠাতা আবুবকর হানিপ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করলেও বাংলাদেশকে আমরা ভালোবাসি। এখানে বাংলাদেশি কমিউনিটিকেও আমরা ভালোবাসি। কমিউনিটির আয়োজনে যে কোনো জাতীয় দিবস উদযাপনে পিপলএনটেক পাশে থাকে এবং থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি পিপলএনটেকের বাংলাদেশের কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণার্থীরাও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করে এবং একুশে উদযাপনের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেন।

post
এনআরবি বিশ্ব

ওয়াশিংটন ডিসিতে হয়ে গেলো রাবি এলামনাই'র বনভোজন ও কমিটি গঠন

মতিহারের সবুজ চত্বরে ফেলা আসা স্মৃতি রোমান্থন করতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ছুটে এসেছেন বনভোজনে। প্রবাসে ব্যস্ত জীবনের পিছুটান ঠেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন, ওয়াশিংটন ডিসি'র অনুষ্ঠান, তাইতো এমন প্রাণের উচ্ছাস। টগবগে যৌবনে পেরিয়ে অনেকেই এখন প্রৌঢ় বয়সে পড়েছেন। কিন্তু রাবির প্রতি আন্তরিকতা ও ভালোবাসা যেন এতটুকু ম্লান হয়নি তাঁদের। অনুষ্ঠানে এসে কেউ খুঁজে পায় তাদের শিক্ষক, বন্ধু, বড় ভাই-বোনকে। প্রবাসে যেখানে বাংলাদেশী মানুষ পেলে উচ্ছাসের ঘাটতি থাকে না, সেখানে ক্যাম্পাসের পরিচিত যেনকে পেয়ে যেন আনন্দ- উল্লাসের কমতি ছিল না।'এসো মিলি শেকড়ের টানে, রাবিয়ানরা একসাথে' এই স্লোগানে গেল ২৯ শে জুলাই শনিবার বনভোজন ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন, ওয়াশিংটন ডিসি।একইসাথে সংগঠনের কাজ বড় পরিসরে করতে গঠন করা হয় নতুন কমিটি। কোরআন তোলওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। তেলাওয়াত করেন, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এস এম জাহিদুর রহমান এবং ড. ইয়াসমিন এর কন্যা জাফরা রহমান।এরপর শুরু হয় পরিচিতি ও বক্তব্যের পালা। শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ও সাবেক শিক্ষার্থীরা তাদের অনুভূতি ব্যাক্ত করেন। ব্যক্তব্যের সময় অনেকে আনমনা হয়ে ক্ষণিকের জন্য ফিরে যায় রাবি ক্যাম্পাসে। ক্যাম্পসের প্রিয় মানুষদের সাথে মিলতে নিজ গৃহে তৈরি করা নানা পদের, নানা স্বাদের খাবার নিয়ে হাজির হয় অনেকে। সুস্বাদু এসব খাবার বেশ আনন্দের সাথেই গ্রহণ করে আমন্ত্রিত অতিথিরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে গানে গানে চলতে থাকে আলাপচারিতা এবং পারস্পারিক পরিচিতি। গান পরিবেশন করেন ওয়াশিংটন ডিসির জনপ্রিয় শিল্পী অসিম রানা, ড.সীমা খান, বুলবুলি ইসলাম, মাসুদ রহমান প্রমুখ। পড়ন্ত বেলায় সুরের মূর্ছনায় হঠাৎ বৃষ্টির আগমন সবাইকে উদ্বেলিত করে। বৃষ্টি বিলাসে ফিরে যায় মতিহারের সবুজ আঙ্গিনায়।  বনভোজনে বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতারও পূর্বের পরিসংখ্যানের ছাত্র ড. কাশেম। তিনি ওয়াশিংটন ডিসির হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় তিন দশক ধরে অধ্যাপনা করেন; এখন তিনি প্রফেসর ইমিরেটস। স্মরণ করেন ফেলে আসা দিনগুলি, সহপাঠী, সহকর্মীদের কথা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্টার অধ্যাপক এন্তাজুল ইসলাম জানান, ছাত্র জীবন, শিক্ষকতা ও প্রশাসনের দায়িত্ব পালনে তর অভিজ্ঞতা। তিনিই ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এলামনাই এসোসিয়েশনের প্রথম সেক্রেটারি। প্রফেসর ড.আতিয়ার রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ে জীবনের সুন্দর সময় বলে অবহিত করেন।অনুষ্ঠানে বাচ্চাদের জন্য ছিল 'যেমন খুশি তেমন সাজো'। পুরুষরা সুই সুতান মালা গেঁথে ভালোবাসার বন্ধনে স্ত্রীদের গলায় মালা পরিয়ে দেয়। আর ঈদের আমেজকে জাগিয়ে তুলতে মেয়েরা হাতে দেয় মেহেদী। পরে বাচ্চাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন সাবেক রেজিস্টার ড. এন্তাজুল ইসলাম।আর র‍্যাফেল ড্রতে ৫০ ইঞ্চি টেলিভিশন জিতে নেন শিল্পী ড. সীমা খান।উল্লেখ্য র‍্যাফেল ড্র স্পনসর করেন রিয়েলেটর মোঃ মজিবুল হক।পিকনিকের আমেজের মধ্যেই এলামনাই-এর সকলের উপস্থিতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন, ওয়াশিংটন ডিসি-এর কমিটি গঠন করা হয়। অ্যালামনাই ও উপস্থিত সকলের সম্মুখে ভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জোহুরুল ইসলাম এবং সেক্রেটারি হন আজিমা আজমল (রক্সি)। নির্বাচন পরিচালনা করেন ড.মোহাম্মদ কাসেম, ড.এন্তাজুল ইসলাম।প্রকাশ্যে কেউ দায়িত্ব নিতে আগ্রহী না থাকায় ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়। তাদের হাত ধরে এগিয়ে যাবে রাবির সাবেক শিক্ষার্থীদের আবেগের সংগঠন এমনটাই প্রত্যাশা সবার।অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন, আবু জাফর ও সাংবাদিক জাহিদ রহমান। আর গরম আবহাওয়ার মধ্যে উপস্থিত থাকায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এলামনাই এর প্রতিষ্ঠাতা এস এম জাহিদুর রহমান।প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে ২৩ শে অক্টোবর পিকনিক এবং আহবায়ক কমিটির মাধ্যমে পথ চলা শুরু হয় সংগঠনটির। গেল বছর ১০ই ডিসেম্বর পিঠা উৎসবও করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন ওয়াশিংটন ডিসি।

post
এনআরবি বিশ্ব

সাড়ে সাত হাজার মাইল দূরে , তবু হৃদয় জুড়ে বাংলাদেশ!

লেখক: ফারহানা হানিপআর আট দশটা সাধারন মেয়ের মত বেড়ে ওঠা আমার। অস্তিত্ত্বের মাঝে একাত্তর একটা আলাদা জায়গা নিয়ে ছিল আমার চিরদিন। আমাকে ছোটবেলায় সবাই ফারহা নামে ডাকতো। ফারহা থেকে ফারহানা হানিপ, এতগুলো বছরের পথচলা আমাকে একদিনের জন্যও দেশ কিংবা দেশের মাটি থেকে আলাদা করতে পারেনি। বরং প্রতিটি মুহূর্তে আমি অনুভব করেছি মাটি, মা আর একাত্তরকে। আমার কাছে বাঙালীয়ানা শব্দটার পূর্নতা বঙ্গবন্ধুর বজ্রকন্ঠের ৭ই মার্চের ভাষনে আর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িটা একটুকরো বাংলাদেশ। আমি সবসময় চাইতাম আমার সন্তান যেন ঠিক আমার মত করেই দেশ, মাটি, একাত্তর, বঙ্গবন্ধুকে আপন করে নেয় হৃদয়ের অন্ত:স্তলে।লেখালেখি আমি তেমন একটা করিনা। সারাদিন কাজের ব্যস্ততায় আর সংসার সামলে ঠিক হয়েও ওঠেনা। কিন্তু মার্চ মাস এলেই কেমন জানি লাগতে থাকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা হয়েছিল এই মার্চ মাসেই। দেশাত্মবোধক গানগুলো শুনে আজও আমার রোমকূপ দাঁড়িয়ে যায়। ‘৭১ এ আমার জন্ম হয় নি, কিন্তু বাবা-মার কাছে অনেক শুনেছি সেই উত্তাল দিনগুলোর কথা। অনেকের মতই জীবন সংগ্রামে আজ বসতি গড়েছি বিদেশের মাটিতে, কিন্তু শিকড়টা ঠিকই পড়ে আছে আমার মাতৃভূমি, বাংলাদেশে।তাই দেশকে নিয়ে কিছু লেখার সুযোগ পেয়ে লোভ সামলাতে পারলাম না। আমার তিন মেয়ে। নাফিসা, প্রিয়েতা আর ইলাফ। ছোট মেয়েটা তখন খুবই ছোট। গত বছর গ্রীষ্মের ছুটিতে মেয়েদের নিয়ে গিয়েছিলাম বাংলাদেশে বেড়াতে। উদ্দেশ্য ছিল পরিবারের সাথে ঈদ করা আর বিদেশে যে জিনিসটা খুব মিস করি; মেয়েদের সাথে বাংলাদেশের ইতিহাস আর সংস্কৃতির সংযোগ তৈরি করে দেয়া। মাত্র কয়েক সপ্তাহর ছুটি। কিন্তু শত ব্যস্ততার মধ্যেও এবার চেয়েছিলাম মেয়েদেরকে কিছু হলেও ঢাকা শহর ঘুরিয়ে দেখাব। লিস্ট করলাম কোথায় কোথায় যাওয়া যায়; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মৃতি জাদুঘর, লালবাগের কেল্লা, আহসান মঞ্জিল ইত্যাদি ইত্যাদি।ঢাকায়পৌঁছানোর পরই নানা কাজের ব্যাস্ততায় দেখতে দেখতে সময়টা শেষ হয়ে এলো! কিন্তু এবার না হলেই নয়... দিনটি ছিল আগস্ট মাসের ১৫ তারিখ। জাতীয় শোক দিবস আবার সরকারি ছুটির দিনও। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডে সপরিবারে প্রাণ হারান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান। ভাবছিলাম আজকের দিনটায় কি করা যায়। দেখতে দেখতে চলে যাবার সময় হয়ে গেলো, আর কিছুদিন পরেই আমেরিকায় ফিরতে হবে। ভাবলাম সময় নষ্ট না করে আজকের এই বিশেষ দিনটিকে স্মরণ করে রাখার জন্য সবচেয়ে ভাল হবে যদি ওদেরকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মৃতি জাদুঘরটা ঘুরে আসা যায়। ওরাও জানলো মাতৃভূমি জন্মের ইতিহাস। কয়েকজন বন্ধুদেরকে ফোন দিলাম কিন্তু কাওকেই পেলাম না, সবাই পরিবার নিয়ে কোথাও না কোথাও ছুটি কাটাতে গিয়েছে। অতঃপর আমাদের যাত্রা ধানমণ্ডি৩২ নং এর ঐতিহাসিক বাড়ি। ড্রাইভার বেশ অবাক হয়ে বলল, আপা আজ তো সব বন্ধ- শপিং মল, দোকানপাট সব বন্ধ। আমি বললাম ধানমণ্ডি ৩২এ চল। গাড়িতে আমি, দুই মেয়ে আর আমার ভাগ্নে লিংকন। ঘুরতে বের হয়ে প্রথমে বাচ্চাদের আগ্রহ যমুনা ফিউচার পার্ক বা হাতিরঝিল ফ্লাইওভারে থাকলেও পরের ঘটনা ছিল একেবারে ভিন্নরকম!কথা বলতে বলতে কখন যে গাড়ি পৌঁছে গেলো টেরই পাইনি। যদিও ধানমণ্ডি এলাকায় বেশ ট্রাফিক এ পড়তে হয়েছিল। কয়েক বছরে আশেপাশের পরিবেশ অনেক বদলে গেছে। ধানমন্ডির লেক সার্কাসে৩২ নম্বর রোডেই সেই স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটি। এখানেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি তাঁর জীবনের শেষদিন পর্যন্ত সপরিবারে ছিলেন। এই বাড়ি থেকেই পাকিস্তানী সৈন্যরা তাকে অসংখ্যবার গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তিনি এখান থেকেই দেশ পরিচালনার কাজ করতেন। বাড়ির প্রতিটি জায়গায় বঙ্গবন্ধুর সেই সময়ের সব চিহ্নগুলোকে সেভাবেই রেখে দেয়া হয়েছে।১৯৯৪ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁদের ধানমণ্ডি ৩২ এর এই বাড়িটি বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে ট্রাস্ট তাঁর স্মৃতি ধরে রাখার জন্য সেটাকে জাদুঘরে রূপান্তর করে আর সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয় ১৯৯৭ সালে। গেটে ঢুকতেই সিকিউরিটি চেকিং। ব্যাগ, মোবাইল, ক্যামেরা সব রেখে ঢুকতে হয়। মেয়েরা ছোট, তাই ক্যামেরা সাথে নেয়ার জন্য খুব বায়না ধরল, কিন্তু ওদেরকে না বললাম। বাসার নিচতলায় বঙ্গবন্ধুর অফিস রুম। গুলির আঘাতে সব ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। সব ঠিক সেভাবে সংরক্ষণ করা আছে। এছাড়া তার বিভিন্ন সময়ের স্মৃতিবিজড়িত ছবি দিয়ে জাদুঘরটি সাজানো হয়েছে। জাদুঘরটিতে গাইডের ব্যাবস্থাও আছে যিনি জাদুঘরের বিভিন্ন জিনিসপত্র দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে এর ইতিহাসও বর্ণনা করলেন আমাদের কাছে। আমি বুঝতে পারলাম মেয়েরা তখন আগ্রহ পাচ্ছে। ওদের জন্য বাংলা, আর ইংরেজিতে বুঝিয়ে দিতে হচ্ছিল। কিন্তু ওদেরকে আমাদের দেশের ইতিহাস পড়ে শোনাতে আমার খুব ভাল লাগছিল। দোতলায় বঙ্গবন্ধুর বেডরুম। এতো বড় মাপের একজন মানুষ, কিন্তু তাঁর কী সাধারণ আটপৌরে জীবন। কোন বিলাসিতা নেই! বাড়ির ভেতরটা ছিল খুবই শান্ত, বিশেষ দিন হওয়াতে লোকজনের বেশ ভিড় ছিল। তবু আমি ওদেরকে পুরো বাড়ির সবগুলো ঘর ঘুরে দেখালাম। হায়নাদের গুলির আঘাতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল চারপাশের সব দেয়ালগুলো। সেই গুলিতে একতলার সিঁড়িতে লুটিয়ে পড়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। পাশেই পড়ে থাকা তাঁর ভাঙা চশমা ও পছন্দের তামাকের পাইপটি আজও একিভাবে রাখা আছে। রিসেপশান, বেডরুমের সামনে, সিঁড়িতে, বাথরুমে সব জায়গায় নারকীয় পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে সপরিবারে হত্যা করে খুনিরা। বাচ্চারা প্রতিটি জিনিস খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছিল, শুনছিল আর কাগজে নোট করছিল। একটা সময়ে হঠাত খেয়াল করলাম, বড় মেয়েটা খুব ইমোশনাল হয়ে পড়েছে। আমি বুঝতে পারলাম, কিন্তু কিছু বললাম না। সবশেষে গেলাম শেখ রাসেলের রুম এ। তার সেই ব্যবহৃত খেলনা বাই সাইকেল সব ওভাবেই পড়ে আছে। তখন নাফিসা আর চোখের পানি আটকে রাখতে পারল না। আমাকে জরিয়ে ধরে হাঁটছে, ছবি আর জিনিসের কাপশান পড়ছে আর তার চোখ দিয়ে পানি পড়েই যাচ্ছে। ঘুরতে ঘুরতে আমরা চলে গেলাম বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলের রুমের পাশের ছাঁদে। কেন জানি না, এমন এক মুহূর্তে বাইরে ঝির ঝির করে বৃষ্টি পড়ছিল। মনের অবস্থা আর পুরো পরিবেশের সাথে একদম মানিয়ে গিয়েছিল বৃষ্টিটা। অচেনা বাতাস আর একটা দীর্ঘশ্বাস। লিওন তখন আমাকে বলল, ফুপ্পি, আমার স্কুল এখানেই। আমরা এখানে আসে পাশে অনেক আসি। কিন্তু এই জাদুঘরে আগে আসা হয়নি। সত্যি, এখানে এসে আমাদের দেশ নিয়ে অনেক কিছু জানলাম। থ্যাঙ্ক ইউ।বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি। আমার সন্তানদের জানাতে চাই ওদের মাতৃভূমি সম্পর্কে, কিভাবে জন্ম হল, কিভাবে স্বাধীন হল, কাদের অবদানের জন্য আমরা আজ বাংলায় কথা বলতে পাড়ি, আমার দেশের ইতিহাস অবশ্যই জানা উচিত। মার্চ মাস আমাদের স্বাধীনতার মাস। ৯ মাস সংগ্রাম, আন্দোলন এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পরিচালিত সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগে আমরা যে স্বাধীন দেশ পেয়েছি, মাতৃভূমি এবং মাতৃভাষার জন্য এই আত্মত্যাগের উদাহরণ ইতিহাসে বিরল। আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনকরে বলতে চাই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন আমদের দেশ নিয়ে ভাবে, দেশের ইতিহাস জানে, দেশের জন্য কাজ করে। তাহলেই তারা খুশি হবেন। গ্রীষ্মের ঐ ছুটিতে মেয়েদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে যাওয়া ছিল আমাদের জন্য সত্যিই সেরা সিদ্ধান্ত ও অভিজ্ঞতা। - ফারহানা হানিপ, ওয়াশিংটন প্রবাসী।

post
এনআরবি বিশ্ব

ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত

৫২তম সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন উপলক্ষে ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে গতকাল মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) এক সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যায় দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মার্কিন সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল প্যাট্রিক ম্যাটলক। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান ও বাংলাদেশ দূতাবাসের ডিফেন্স অ্যাটাচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শাহেদুল ইসলামও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। ইউএস মেরিন কোরের ডেপুটি কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল গেরি গ্ল্যাভি, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মিজ আফরিন আক্তার এবং মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সিমাস হুইটসেলও অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ড. আহমাদ কায়কাউসও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল প্যাট্রিক ম্যাটলক তার বক্তৃতায় জাতীয় স্বাধীনতা রক্ষা এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বাধীনতা রক্ষায় এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে জনগণের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা ও নিঃস্বদের আশ্রয় প্রদান এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনয়নে সম্মুখ ভূমিকা পালন করছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অভিযানে বাংলাদেশকে বিশ্বের বৃহত্তম সৈন্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে উল্লেখ করে প্যাট্রিক ম্যাটলক বলেন, বাংলাদেশি সেনাদের এই অবদানে বিশ্ব আজ কৃতজ্ঞ। তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বর্তমান অংশীদারিত্বের কথা উল্লেখ করেন এবং আশা প্রকাশ করেন আগামী বছরগুলোতে শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য এই অংশীদারিত্ব আরো মজবুত হবে। রাষ্ট্রদূত ইমরান বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, যার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বাঙালি জাতি তার দীর্ঘদিনের কাঙ্খিত স্বাধীনতা অর্জন করে। মুক্তিযুদ্ধে মহান আত্মত্যাগের জন্য তিনি সশস্ত্র বাহিনীর বীর সদস্যসহ ত্রিশ লাখ শহিদের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বহুমুখী সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বলেন দুই দেশ বিভিন্ন প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ইস্যুতে অভিন্ন মতামত বিনিময় করছে। রাষ্ট্রদূত ইমরান বলেন বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র অতীতে বাংলাদেশের উন্নয়নের অভিযাত্রায় সব ধরনের সহায়তা প্রদান করেছে এবং বাংলাদেশ এ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য আগ্রহী । ডিফেন্স অ্যাটাচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শাহেদুল ইসলাম সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথিদের স্বাগত জানান এবং দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো উন্নয়নে অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) মোঃ রাশেদুজ্জামান। এর আগে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন কার্যক্রমের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক ও ডিফেন্স অ্যাটাচে এবং পেন্টাগন, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও অন্যান্য মার্কিন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রবাসী বাংলাদেশি এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধনায় আমন্ত্রিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে প্রধান অতিথি কর্তৃক কেক কাটার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

post
এনআরবি বিশ্ব

ওয়াশিংটন ডিসি’র বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত

ওয়াশিংটন ডিসি, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসরদের হাতে নির্মমভাবে নিহত এ মাটির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে ১৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জনাব মোহাম্মদ ইমরান কর্তৃক বঙ্গবন্ধু কর্নারে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।পরে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এ উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনান মিনিস্টার (কনস্যুলার) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান এবং মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) মোঃ রাশেদুজ্জামান। এরপরে দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত ইমরান শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের দ্বারা বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞকে মানব ইতিহাসের অন্যতম গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেন এবং এই দিনটি আরো বৃহৎ পরিসরে পালনের মাধ্যমে এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত ইমরান বলেন, এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ ছিল জাতির জন্য একটি অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অনুরোধ জানান । আলোচনায় অংশ নিয়ে মিনিস্টার (প্রেস) এজেডএম সাজ্জাদ হোসেন ১৪ ডিসেম্বরকে বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক দিন হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা এই দিনে দেশের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে জাতিকে মেধাশূন্য করতে চেয়েছিল। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের শাস্তি এড়াতে কিছু যুদ্ধাপরাধী বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন এবং খুনিদের বিচারের মুখোমুখি করতে অবিলম্বে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। শহিদ বুদ্ধিজীবী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শেষ হয়। কর্মসূচি পরিচালনা করেন কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি।

post
এনআরবি বিশ্ব

যুক্তরাষ্ট্রে এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা

যুক্তরাষ্ট্রে এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বিত্তরা। দেশটির টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি কফি শপে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে। নিহত শেখ আবির হোসেন সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ঝাপাঘাট গ্রামের মৃত শেখ আজিজুল হাকিমের ছেলে। চুরি করতে বাধা দেয়ায় তাকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ।আবির হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঢাবির সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক শিক্ষার্থী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের লামার ইউনিভার্সিটিতে গ্র্যাজুয়েট গবেষণা সহকারী হিসেবে অধ্যয়নরত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে আবির ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষক হিসেবে কাজ করতেন। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আবিরকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। আবির টেক্সাসের ক্রিস ফুড মার্টের ওই দোকানে স্টোর ক্লার্ক হিসেবে কাজ করতেন। দোকান থেকে সিগারেট নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় দুই সন্দেহভাজন তাকে গুলি করে। এ বছরের ৭ ডিসেম্বরের পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় অন্তত ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

post
এনআরবি বিশ্ব

সাস্কাচুয়ানে চবি প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী সমিতির আত্মপ্রকাশ

কানাডার সাস্কাচুয়ানে যাত্রা শুরু করল সাস্কাচুয়ান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী সমিতি। গত ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাস্কাটুন শহরের প্রসিদ্ধ ‘স্পাইসি টাইম রেস্টুরেন্টে’ আয়োজন করা হয় ফ্যামিলি নাইটের। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী এতে সপরিবারে উপস্থিত হন। নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতিচারণের পাশাপাশি সমিতির ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে শিক্ষার্থীরা মতবিনিময় করেন। নতুন এ সংগঠনের পক্ষ থেকে বছরজুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের পাশাপাশি নতুন অভিবাসী ও শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় সাহায্য প্রধানের ব্যাপারে আলোচকরা গুরুত্ব আরোপ করেন।

post
এনআরবি বিশ্ব

সবার সহযোগিতা পেলে ভার্জিনিয়ার ফোবানা সম্মেলন হবে ইতিহাসের সেরা: রোকসানা

‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঐকান্তিক সহযোগিতা পেলে চলতি বছর গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিতব্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশনস ইন নর্থ আমেরিকা (ফোবানা) ৩৮তম সম্মেলনকে ইতিহাসের সেরা সম্মেলন করা সম্ভব হবে। বহির্বিশ্বে প্রবাসীদের সবচেয়ে বড় ফোবানা সম্মেলন এককভাবে কোনো সংগঠন বা ব্যক্তির পক্ষে সফল বা সার্থক করা সম্ভব নয়। এর জন্য দেশ ও বিদেশের ব্যবসায়ী, সমাজসেবী ও জনহিতৈষী ব্যক্তিদের পৃষ্ঠপোষকতার জরুরি প্রয়োজন।’ গত শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ভার্জিনিয়ার স্প্রিংফিল্ডের হলিডে ইন হোটেলের মিলনায়তনের অনুষ্ঠিত সাক্ষাৎ ও অভিবাদন সভায় এ কথা বলেন ৩৮তম ফোবানা সম্মেলনের কনভেনার রোকসানা পারভিন।বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসি (বাগডিসি) আয়োজিত উক্ত সভায় তিনি বলেন, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে সকলেই আমাদের পাশে এসে দাঁড়ালেই আমরা ইতিহাসের সেরা ফোবানা সম্মেলন উপহার দিতে পারব। চলতি বছর গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসিতে লেবার ডের সপ্তাহান্তে ৩০-৩১ আগস্ট এবং ১ সেপ্টেম্বর ভার্জিনিয়া আর্লিংটনের ক্রিস্টাল গেটওয়ে ম্যারিয়টে অনুষ্ঠিত হবে ৩৮তম ফোবানা সম্মেলন। এবারের সম্মেলনের আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসি। আয়োজক সংগঠন এবং ফোবানা নির্বাহী পরিষদ একটি সফল সম্মেলন করবার জন্য ইতিমধ্যেই সকল প্রকার কর্মকাণ্ড শুরু করেছেন। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার স্প্রিংফিল্ডের হলিডে ইন হোটেলে সাক্ষাৎ ও অভিবাদন সভায় এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরবেন নির্বাহী কমিটি ও আয়োজক সংগঠনে নেতারা। ৩৮তম ফোবানা সম্মেলনের কনভেনার রোকসানা পারভীনের সভাপতিত্বে এবং নির্বাহী সচিব আবীর আলমগীর ও সাংস্কৃতিক কমিটির চেয়ারম্যান তাসকিন বিনতে সিদ্দিকের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সাক্ষাৎ ও অভিবাদন সভায় ফোবানার চেয়ারপারসন মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, এবারের সম্মেলনকে ভিন্ন আঙ্গিকে সাজানোর চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে একটি শক্তিশালী আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি গঠনকালে অনেক বাধা-বিপত্তি দেখা দিয়েছিল। ৩৮তম ফোবানা সম্মেলনের আহ্বায়ক ও প্রসিডেন্ট যাদেরকে নির্বাচিত করা হয়েছে তাদের বিকল্প হিসেবে গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসিতে আর কাউকে খুঁজে পাইনি। এবারের কমিটির টিমে যারা রয়েছেন তাদের যথেষ্ট অভিজ্ঞা রয়েছে। তাদেরকে সুপরামর্শ দিতে পেছনে রয়েছেন দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ফোবানার নেতারা।’ সম্মেলনের নির্বাহী সচিব আবীর আলমগীর বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে ফোবানা সম্মেলন কিন্তু একটাই। এ সংগঠন থেকে বেরিয়ে গিয়ে কেউ যদি একই নাম দিয়ে কিছু করে থাকেন সেটাকে কখনই ফোবানা সম্মেলন বলা যাবে না। যে সম্মেলনে ২২টি শহরেরে ৭৮টি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন যোগ দিয়ে থাকে সেটাকেই একমাত্র ফোবানা সম্মেলন বলা যায়। এর আর কোনো বিকল্প নেই।’ সম্মেলনের সদস্য সচিব আবু রুমি বলেন, এর আগে গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসি এলাকায় আরও চারটি ফোবানা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পঞ্চম বারের মতো গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসি এলাকায় এবারের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিশ্রতি দিচ্ছি এবারের সম্মেলনে অনেক কিছু থাকবে ব্যতিক্রম। সেরা সম্মেলন করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট নুরুল আমিন নুরু বলেন, এবারে ফোবানা সম্মেলনের জন্য যে হোটেল আমরা নির্ধারণ করেছি সেটি গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসির সবচেয়ে বড় হোটেল। এর আগে আর কখনও এতবড় হোটেলে ফোবানা সম্মেলন হয়নি। হোটেলের লোকেশন থেকে সকল দর্শনীয় স্থান হাতের কাছেই। ফোবানা সম্মেলনে যারা আসবেন, তারা অবকাশে এসে সবকিছুই অনায়াসেই দর্শনীয় স্থানগুলো দেখতে এবং ঘুরতে পারবেন। সম্মেলনের অর্থ কমিটির চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম স্বপন বলেন, আমরা যে কমিটি নিয়ে কাজ শুরু করেছি সেটি অত্যন্ত সুশৃঙ্খল। তাদের মধ্যে অনেকেরই ফোবানা সম্মেলনের পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। আশা করছি ৩৮তম ফোবানা সম্মেলন সফল ও সার্থক হবেই। অন্যান্য বক্তারা বলেন, ফোবানা একটি সম্মেলন, এটাকে শুধুমাত্র বিনোদন হিসেবে দেখলে হবে না। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশিদের সর্ববৃহৎ সম্মেলন হচ্ছে ফোবানা। এ বিষয়টিকে সবসময় মাথায় রাখতে হবে। অতীতের সমস্ত ভুল-ক্রুটি থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। অতীতে যেসব ভুলের কারণে ফোবানা সম্মেলন বিফল হয়েছিলে সে সমস্ত ভুল আগেই শোধরাতে হবে, তাহলেই একটি সফল ফোবানা সম্মেলন আমরা আশা করতে পারবো। তবে এবারেই সবচেয়ে বেশী যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অঙ্গরাজ্য থেকে সাক্ষাত ও অভিবাদন সভায় ফোবানার নেতারা যোগ দিয়েছেন। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ৩৮তম ফোবানা সম্মেলনের কনভেনার রোকসানা পারভিন, ফোবানার নির্বাহী কমিটির অর্থ সচিব প্রিয়লাল কর্মকার, যুগ্ম নির্বাহী সচিব খালেদ আহমেদ রউফ, সাংস্কৃতিক কমিটির চেয়ারম্যান তাসকিন বিনতে সিদ্দিক, সাবেক কর্মকর্তা ডিউক খান, জয়নাল আবেদীন, মাহবুব রেজা রহিম, রবিউল করিম বেলাল, রেহান রেজা, নাহিদুল খান সাহেল, মাহবুবুর ভুঁইয়া, পারভীন পাটোয়ারী, মাজহারুল ইসলাম, ভয়েস অব আমেরিকার সাবেক প্রধান রোকেয়া হায়দার, ভয়েস অব আমেরিকার সাবেক কর্মকর্তা সরকার কবির উদ্দিন, দেশের জনপ্রিয় নৃত্যুশিল্পী লায়লা হাসান, এটর্নি জন কাপুর, প্রকৌশলী আবু হানিফ, হীরন চৌধুরী, মাহমুদুন নবী বাকি, তাপস মজুমদার, ডা: আনোয়ারুল করিম, মাহবুব লস্কর ও বুলবুল ইসলাম প্রমুখ। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার ঢাকায় সাক্ষাতে অভিবাদন (মিট অ্যান্ড গ্রিট) অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকায় সাক্ষাত ও অভিবাদন অনুষ্ঠানটি হবে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বলরুমে। উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেট থেকে ফোবানার স্বাগতিক কমিটি এবং নির্বাহী কমিটিসহ ফোবানার নেতৃত্ববৃন্দরা ঢাকায় যাচ্ছেন। ঢাকার সাক্ষাত ও অভিবাদন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ, সুধীজন, শিল্পী এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন স্পনসর প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ব্যক্তিবর্গ।

About Us

NRBC is an open news and tele video entertainment platform for non-residential Bengali network across the globe with no-business vision just to deliver news to the Bengali community.