post
আন্তর্জাতিক

অবশেষে পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক

সমালোচনার মুখে যুক্তরাজ্যের ইকোনোমিক সেক্রেটারির পদ থেকে টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নিয়ে ব্যাপক চাপের মুখে ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) টিউলিপ নিজেই এক টুইটে তার পদত্যাগের বিষয়টি জানিয়েছেন।টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে। এরপর নিজের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগকে তদন্তের আহ্বান জানান টিউলিপ। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস।গত আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। এরপর শেখ হাসিনা সরকার আমলে বাংলাদেশে ৯টি অবকাঠামো প্রকল্প থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। তাতে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম আসে। ওই অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।দুদকের এই তৎপরতা আলোচনায় আসার পর যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি খবর প্রকাশ হয়। ২০১৩ সালে শেখ হাসিনার মস্কো সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার বৈঠকের সময় টিউলিপ সিদ্দিকও উপস্থিত ছিলেন। তার ওই ছবি এ সময় ফলাও করে প্রচার করে বেশ কয়েকটি ব্রিটিশ গণমাধ্যম।লন্ডনে হাসিনা ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে উপহার নেওয়া ছাড়াও; সাবেক এক বাংলাদেশি এমপির কাছ থেকে ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের দুটি টিকিট নিয়েছিলেন টিউলিপ। এসবের মধ্যেই দেশটির বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছিল। তারা বলছিল, টিউলিপের ওপর ব্রিটেনের দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারই নাম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছে। এতে তিনি মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পালনের নৈতিকতা হারিয়েছেন।রয়টার্স লিখেছে, পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, অভিযোগ পর্যালোচনার পর ব্রিটিশ সরকারের ইনডিপেনডেন্ট এথিকস অ্যাডভাইজর (স্ট্যান্ডার্ডস ওয়াচডগ) স্যার লাউরি ম্যাগনাস নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি মন্ত্রী হিসেবে কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করেননি।পরে মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো টিউলিপ এক্স হ্যান্ডেলে তার পদত্যাগের কথা জানান। এতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো পদত্যাগপত্রের ছবিও পোস্ট করেন।

post
আন্তর্জাতিক

দ্রুত গতিতে হোয়াইট হাউজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পর দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য হোয়াইট হাউজে যাওয়ার প্রস্তুতি দ্রুত গতিতেই সারছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ইতোমধ্যেই তিনি তার কাজ শুরু করে দিয়েছেন এবং এর অনেক কিছু ওয়াশিংটনসহ বিশ্বের অনেককেই বিস্মিত করছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম সপ্তাহে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় এখানে আলোচনা করা হলো- বিশ্বস্ত টিম তৈরি নির্বাচনে জয়ের পর দ্রুতই ট্রাম্প তার টপ টিম বা প্রধান দল তৈরি করেছেন। মন্ত্রিসভার কয়েকজনের নাম চূড়ান্ত করেছেন তিনি যাদের জন্য সিনেটের অনুমোদন লাগবে। এছাড়া হোয়াইট হাউজের উপদেষ্টা ও কয়েকজন সিনিয়র সহযোগীকে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাম্প।কিন্তু এটাই সব খবর নয়। যাদের পছন্দ করে নিয়োগ বা মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তা পরিষ্কার ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ট্রাম্প সরকারে একটি বড় ধরনের ঝাঁকুনি দিতে চাচ্ছেন। ট্রাম্প যাকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন তিনি এমন নীতি তৈরি করবেন বলে উল্লেখ করেছেন যার মাধ্যমে অনাকাঙ্ক্ষিত সামরিক কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হবে। তেমনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়া রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র বলেছেন, তিনি আমেরিকার হেলথ এজেন্সিগুলো থেকে দুর্নীতি দূর করবেন এবং ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কিছু বিভাগের পুরোটাই বাতিল করে দেবেন।উপদেষ্টা ইলন মাস্ক ও বিবেক রামাস্বামী ট্রাম্পের প্রতিশ্রুত ‘সরকারি দক্ষতা বিভাগের নেতৃত্ব’ দেবেন। ট্রাম্প বলেছেন, এটি সরকারের খরচ কমিয়ে আনার ওপর জোর দেবে। ‘বন্ধুত্বপূর্ণ কংগ্রেস’ পাচ্ছেন ট্রাম্প এবার রিপাবলিকানরাই নিয়ন্ত্রণ করছে হাউজ ও সিনেট। অন্তত আগামী দুবছরের জন্য কংগ্রেসের উভয় কক্ষে দলটির সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। এটা ট্রাম্পের এজেন্ডাগুলো বাস্তবায়নের জন্য সহায়ক হবে। কারণ এখন তিনি সহজেই তার পক্ষে আইন পাশ করিয়ে আনতে পারবেন এবং তার নীতিগুলো আইনে পরিণত করার পথ সহজ হবে। তিনি তার প্রথম মেয়াদের শেষ দিকে যেভাবে কংগ্রেসের তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন বারবার সেটা এবার এড়াতে সক্ষম হবেন। বিপুল সংখ্যক অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফিরিয়ে দেওয়া বা আমদানি শুল্ক বাড়ানোর মতো বিষয়গুলোতে তার প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের জন্য রিপাবলিক নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেস ভূমিকা রাখবে।সিনেটের নতুন নেতা নির্বাচনের মধ্য দিয়েই ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রভাবের একটা পরীক্ষা হয়ে যাবে চলতি সপ্তাহেই। তিনি এ বিষয়ে সরাসরি কিছু না বললেও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা এর মধ্যেই কথা বলেছেন যেখানে এ পদের জন্য ট্রাম্পের অনুগত রিক স্কটের নাম এসেছিল। কিন্তু প্রথম রাউন্ডের ভোটেই তিনি হেরে গেছেন বরং রিপাবলিকানরা বেছে নিয়েছে জন থুনেকে। তার সাথে ট্রাম্পের সম্পর্ক খুব একটা সহজ নয়। ফলে সিনেটের অনুমোদনের জন্য ট্রাম্পের যেসব মনোনয়নগুলো আসবে সেগুলো কিছুটা পরীক্ষার মধ্যে পড়তে পারে। কিছু সিনেট রিপাবলিকান ইতোমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ট্রাম্প বিচার বিভাগের দায়িত্ব যাকে দিতে যাচ্ছে সেই ম্যাট গ্যায়েৎযের বিরোধিতা করবেন তারা।

post
আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প দায়িত্ব নিলে শিগগিরই ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হবে: জেলেনস্কি

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নিলে শিগগিরই ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, এটা নিশ্চিত যে এখন যারা হোয়াইট হাউসকে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছে, তাদের নীতিমালা অনুযায়ী দ্রুতই যুদ্ধ শেষ হবে। এটি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি, তাদের নাগরিকদের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ শেষ হবে, তবে আমরা এর নির্দিষ্ট দিন-তারিখ জানি না। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া

post
আন্তর্জাতিক

আবার কীভাবে জিতলেন ট্রাম্প

আট বছর আগে প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন ট্রাম্পের বিজয়কে ‘সংকীর্ণ’ হিসেবে বর্ণনা করাটা সহজ ছিল। এমনকি সেই বিজয়কে ‘অপ্রত্যাশিত’ সাফল্য হিসেবে অভিহিত করারও সুযোগ ছিল। কিন্তু এবার আর ট্রাম্পের বিজয়ের ক্ষেত্রে এসব কথা প্রযোজ্য নয়। ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনের কাছ পরাজিত হয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু তিনি নির্বাচনে জালিয়াতির ভুয়া অভিযোগ তোলেন। ট্রাম্পের উসকানিতে তাঁর উগ্র সমর্থকেরা ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেস ভবনে (ক্যাপিটল হিল) রক্তক্ষয়ী হামলা চালিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি মামলা হয়। এমনকি একটি ফৌজদারি মামলায় তিনি দোষী সাব্যস্ত পর্যন্ত হন। এত কিছু সত্ত্বেও ট্রাম্প এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে স্পষ্ট বিজয় অর্জন করেছেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি দোদুল্যমান হিসেবে পরিচিত সাতটির মধ্যে পাঁচটি অঙ্গরাজ্যেই জয়ী হয়েছেন। ফলাফল এখনো ঘোষণা না হওয়া বাকি দুটিতেও তিনি জয়ের পথে।এবারের নির্বাচনে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি প্রান্তে তাঁর সমর্থন বাড়িয়েছেন। এমনকি প্রায় প্রতিটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে তাঁর সমর্থন এবার বাড়তে দেখা গেছে। ২০২০ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের ফলাফলের মধ্যে যদি তুলনা করা হয়, তাহলে নির্বাচনী মানচিত্র ‘লাল’ রঙের (রিপাবলিকান) ছেয়ে যাওয়ার দৃশ্য চোখে পড়বে। নিউইয়র্ক টাইমসের অনুমিত হিসাব অনুযায়ী, ট্রাম্প গত ২০ বছরের মধ্যে প্রথম কোনো রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী, যিনি জাতীয় সাধারণ ভোটেও (পপুলার ভোট) জয়ী হতে যাচ্ছেন। তবে একই সময়ে এ কথাও বলতে হয়, ট্রাম্পের এই জয়ের মাত্রাকে অতিরঞ্জিত করে দেখা উচিত নয়। কারণ, এটি কোনো ভূমিধস জয় নয়।যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় পপুলার ভোটের ক্ষেত্রে কোনো প্রার্থীর এক বা দুই শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে বিজয় অর্জন অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়। আবার প্রায় ৩১২টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেয়ে কোনো প্রার্থীর জয়ী হওয়াটাও বিরল কিছু নয়। ট্রাম্পের এবারের জয় ২০১২ সালে ডেমোক্র্যাটপ্রার্থী বারাক ওবামার ‘পরিমিত’ বিজয়ের মতো অতটা বড় কিছু নয়। পরিবর্তনের ডাক দিয়ে ওবামা ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রথমবার জয়ী হন। একইভাবে আরেক ডেমোক্র্যাটপ্রার্থী বিল ক্লিনটন পরিবর্তনের ডাক দিয়ে ১৯৯২ সালের নির্বাচনী জয়ী হয়েছিলেন। এই দুই নির্বাচনে জয়ী দুই প্রার্থীর (ওবামা ও ক্লিনটন) চেয়েও ভালো করতে পারেননি ট্রাম্প। বরং এ ক্ষেত্রে তিনি অনেকটা পিছিয়ে আছেন।তবে যে বিষয়টি উল্লেখযোগ্য, তা হলো ট্রাম্প কোনো সাধারণ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নন। ফলে তাঁর সাদামাটা জয়ও নিয়ে অনেক চর্চা হচ্ছে। ট্রাম্প আদালত ঘোষিত রায় অনুযায়ী একজন অপরাধী। তিনি ২০২০ সালের নির্বাচনে পরাজিত হয়ে ফলাফল উল্টে দিতে চেয়েছিলেন। সে জন্য তিনি নানান অপতৎপরতা চালিয়েছিলেন। এসব দিক বিবেচনায় ট্রাম্পকে সাধারণভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘কার্যকর’ প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল না। তবে বাস্তবিক ক্ষেত্রে দেখা গেল, ট্রাম্প কেবল কার্যকর প্রার্থীই ছিলেন না, তিনি সন্তোষজনকভাবে জিতে গেছেন। ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হওয়া সত্ত্বেও বেশির ভাগ ভোটার তাঁকে একজন ‘অপ্রীতিকর’ প্রার্থী হিসেবে দেখছেন।সিএনএনের বুথফেরত জরিপে (এক্সিট পোল) দেখা গেছে, ট্রাম্পের প্রতি অনুকূল দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা ভোটারের হার মাত্র ৪৪ শতাংশ। অন্যদিকে, ট্রাম্পের প্রতি প্রতিকূল দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা ভোটারের হার ৫৪ শতাংশ। বেশির ভাগ ভোটার (৫৫ শতাংশ) বলেছেন, ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি খুবই চরম। তবে এই ব্যাপারটি স্পষ্ট যে ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের বিষয়ে আবেদন থাকার ক্ষেত্রে এমন অনেক দিক আছে, যা জরিপের সহজ প্রশ্নে উঠে আসে না। কিন্তু ট্রাম্পের এই বিজয় ডেমোক্র্যাটদের অবস্থা সম্পর্কে অনেক বিষয়ের ব্যাখ্যা দিতে পারে। আবার মার্কিন জনসাধারণের মধ্যে পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা, সে বিষয় সম্পর্কেও ধারণা দিতে পারে। সেই প্রেক্ষাপটে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তি ট্রাম্পের ভূমিকা মুখ্য নয়। সর্বোপরি কাগজে-কলমে ডেমোক্র্যাটরা এই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য উপযুক্ত অবস্থানে ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রে কোনো প্রেসিডেন্টের জনসমর্থন যখন তলানিতে চলে যায়, তখন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর নির্বাচনে জয়ী হয়ে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার ইতিহাস নেই। আবার অনেক আমেরিকান যখন মনে করেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বে দেশ ভুল পথে রয়েছে, তখনো সেই দলের প্রার্থীর জয়ী হওয়ার নজির নেই।

post
আন্তর্জাতিক

শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী প্রচারে কমলা ও ট্রাম্প কী বললেন

ভোটের আগের দিন গতকাল সোমবার পেনসিলভানিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপালিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। উভয়ই নিজের জয় নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এবারের মার্কিন নির্বাচনের প্রচারণায় মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনী সমাবেশ চলাকালে রিপালিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্পের ওপর দুবার গুলি চলেছে। গুরুতর ফৌজদারি অপরাধে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। অন্যদিকে নির্বাচনী প্রচারের মাঝপথে হঠাৎ করেই সামনে চলে আসেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা। নিজ দলের ভেতর থেকে চাপের মুখে ৮১ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবারের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। বাইডেন সরে দাঁড়ালে তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট সামনে চলে আসেন।অ্যানালিটিকস ফার্ম অ্যাডইমপ্যাক্টের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, মার্চ থেকে নির্বাচনী প্রচারে ২৬০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ ব্যয় হয়েছে। অধিকাংশ জনমত জরিপে কমলা (৬০) ও ট্রাম্পের (৭৮) মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার ভোটের দিনই তাই ভোটের ফলাফল পাওয়া না–ও যেতে পারে। যদিও ট্রাম্প এরই মধ্যে আভাস দিয়েছেন, তিনি নিজের পরাজয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত। উভয় প্রার্থী গতকাল পেনসিলভানিয়ায় সমাবেশে ভোটের দিন সমর্থকদের ভোট দিতে যেতে বলেছেন। মঙ্গলবার ভোট হলেও কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আগাম ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে গেছে। তবে যাঁরা এখনো ভোট দিতে যাননি, তাঁদের ভোট দিতে যেতে বলেছেন কমলা ও ট্রাম্প।যে সাত অঙ্গরাজ্যকে নির্বাচনী যুদ্ধক্ষেত্র বলা হয়, তার একটি পেনসিলভানিয়া। এই সাত রাজ্যের মধ্যে পেনসিলভানিয়ায় ইলেকটোরাল কলেজ ভোট সবচেয়ে বেশি। ভোট শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে পিটসবার্গে বিশাল এক নির্বাচনী সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা চার বছর ধরে এর জন্য অপেক্ষা করছি।’ প্রতিদ্বন্দ্বী কমলাকে আক্রমণ করতে গিয়ে এদিন তিনি আরও বলেন, কমলা জিতলে সঙ্গে করে অর্থনৈতিক দুর্দশা নিয়ে আসবেন। ট্রাম্প বলেন, ‘ট্রাম্পকে একটি ভোট দেওয়ার অর্থ আপনাদের নিত্যপণ্যের দাম কমবে, আপনাদের বেতন বাড়বে, আপনাদের সড়ক অধিক নিরাপদ হবে, জাতি হিসেবে আপনারা আরও সমৃদ্ধ হবেন এবং আগের তুলনায় আপনার ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে।’ অ্যালেনটাউনে সমাবেশে কমলা নিজের জয় নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি ‘সব আমেরিকানের’ প্রেসিডেন্ট হয়ে ওঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

post
আন্তর্জাতিক

মার্কিন নির্বাচন কেন নভেম্বরের প্রথম মঙ্গলবার হয়

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ওই দিন মঙ্গলবার। ১৮৪৫ সাল থেকে নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পরদিন মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু এই ভোট গ্রহণ কেন নভেম্বর মাসে, আর কেনই–বা প্রথম সোমবারের পরদিন মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়! এর পেছনে রয়েছে ইতিহাস। যে কারণে নভেম্বরে ভোট ১৮৪০ সালের আগে যুক্তরাষ্ট্রে ভোটের জন্য কোনো আলাদা দিন নির্ধারিত ছিল না। এ সময় নির্বাচনের তারিখ অঙ্গরাজ্যগুলো ঠিক করত। এতে একেক অঙ্গরাজ্যে একেক দিন ভোট হতো। তবে বেশির ভাগ অঙ্গরাজ্যই ভোট গ্রহণের জন্য নভেম্বর মাসকে বেছে নিত। এতে নানা ধরনের সংকটের সৃষ্টি হতো। এসব সংকট কাটাতে ১৮৪৫ সালে দেশে একটি নির্দিষ্ট দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইন পাস হয়। শুরুর দিকে শুধু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য নির্দিষ্ট তারিখ মেনে চললেও পরে সব ধরনের নির্বাচনেই এই আইনের প্রয়োগ শুরু হয়। নভেম্বরে ভোট দেওয়ার কারণ বেশ সহজ। শুরুতে ফেডারেল আইনের অধীনে ইলেকটোরাল কলেজের নির্বাচকদের ডিসেম্বরের প্রথম বুধবার পৃথক রাজ্যে মিলিত হওয়ার রীতি ছিল। ১৭৯২ সালের ফেডারেল আইন অনুসারে, রাজ্যগুলোর নির্বাচন (যাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন, এমন নির্বাচকদের ভোট) সেই দিনের আগে ৩৪ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার নিয়ম চালু হয়। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার তথ্য অনুযায়ী, ১৮৪৫ সালে যখন নতুন এ আইন পাস হয়, তখন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষিভিত্তিক সমাজ ছিল। এ কারণে দেশটির শ্রমশক্তির সবচেয়ে বড় অংশ কৃষকদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণে বড় ভূমিকা রেখেছে। বছরের অধিকাংশ সময় কৃষকেরা কৃষিকাজে ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু নভেম্বরের শুরুতে কৃষকের ঘরে ফসল উঠে যায়। সময়টা কৃষকদের জন্য অবসর থাকে। আর আবহাওয়াও বেশ অনুকূল থাকে। এ কারণে কৃষকের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য নভেম্বরকে বেছে নেওয়া হয়। নতুন এই আইনের আগে রাজ্যে বিভিন্ন দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতো। তখন যোগাযোগব্যবস্থা এত উন্নত ছিল না। নির্বাচনের ফলাফলের জন্য কয়েক দিন বা সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হতো। নিউ জার্সিতে ভোটদানকারী লোকেরা মেইন বা জর্জিয়ার ভোটে কে জিতেছেন, তা জেনে প্রভাবিত হতে পারতেন না। কিন্তু ১৮৪০ সালের দিকে সবকিছু বদলে যেতে লাগল। রেলপথ নির্মাণের কারণে ডাক ও সংবাদপত্র পরিবহন অনেক দ্রুততর হয়ে ওঠে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে যেটা সমাজকে বদলে দিয়েছে, তা হলো টেলিগ্রাফ। কয়েক মিনিটের মধ্যে শহরের যেকোনো খবর পাওয়া সম্ভব হয়ে উঠল। এর ফলে একটি রাজ্যের নির্বাচনের ফল অন্য রাজ্যের ভোটকে প্রভাবিত করতে শুরু করল। এতে একটা সমস্যার সৃষ্টি হয়। ভোটাররা রাজ্য থেকে রাজ্যে ভ্রমণ করে একাধিক নির্বাচনে অংশ নিতে শুরু করেন। নির্বাচনে কারচুপির আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই ১৮৪০ দশকের শুরুর দিকে কংগ্রেস সারা দেশে নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য একটি একক দিন নির্ধারণ করে। কেন প্রথম সোমবারের পরের মঙ্গলবার? ১৮৪৫ সালে কংগ্রেস আইন পাস করে যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রতি চার বছর পর নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পর প্রথম মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম সোমবারের পর প্রথম মঙ্গলবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া মানে ভোট কখনোই ১ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে না। কারণ, ১ নভেম্বর খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা ‘অল সেইন্টস ডে’ পালন করে। এটি ক্যাথলিক অনুসারীদের একটি পবিত্র দিন। এ ছাড়া ওই দিন ব্যবসায়ীরা আগের মাসের হিসাব মেলানোর কাজ করেন। দিনটি ব্যবসায়ীদের জন্য অনেক কর্মচঞ্চল ও গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে ভোট গ্রহণ হলে ব্যবসার ক্ষতি হবে ভেবে তা বাদ দেওয়া হয়। নতুন এই আইনে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৪৮ সালের ৭ নভেম্বর। মঙ্গলবার যে কারণে এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার তথ্য বলছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য দুই দিন বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু শুরুতেই তা বাতিল করা হয়। কারণ, অধিকাংশ আমেরিকানই রোববারকে উপাসনার দিন হিসেবে আলাদা করে রাখেন। অনেক স্থানে বুধবার ছিল বাজারের দিন। এদিন কৃষকেরা তাঁদের ফসল নিয়ে শহরে বিক্রি করতে যান। এ ছাড়া গ্রামীণ এলাকায় নিকটতম ভোটকেন্দ্র কয়েক মাইল দূরে থাকত। সেখানে পৌঁছাতে অনেক সময় লেগে যেত। তাই, ভ্রমণের জন্য রোববার ও বুধবার এড়িয়ে সোমবার করা হয়। যাতে তাঁরা নির্বিঘ্নে মঙ্গলবারে ভোট দিতে পারেন। এর পর থেকেই চার বছর পরপর নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পর মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জন্য ভোট দেওয়ার দিনের ঐতিহ্য ১৮৪৮ সাল থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে অব্যাহত রয়েছে। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা, থট কো, হিস্টোরি ডটকম ও সিএনবিসি অবলম্বনে সুজন সুপান্থ

post
আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনে ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ পদ্ধতি কী?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোট নেওয়া হবে পাঁচই নভেম্বর। কিন্তু যে প্রার্থী সবথেকে বেশি ভোট পাবেন, তিনিই যে জয়ী হবেন, এমন নিশ্চয়তা নেই। এর কারণ হল ভোটাররা সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন না। ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ নামে এক পদ্ধতিতে হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা যখন নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেবেন, বেশিরভাগই হয় ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমালা হ্যারিস অথবা রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেবেন। তবে এদের দুজনের মধ্যে কে জয়ী হবেন, সেটা ভোটারদের দেওয়া ভোটে সরাসরি নির্ধারিত হবে না। জাতীয় স্তরের নির্বাচনি লড়াইয়ের বদলে জয়ী-পরাজিত নির্ধারিত হবে একেকটি অঙ্গরাজ্যের নির্বাচনি লড়াইয়ের মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের একটিতে জয়ী হওয়ার অর্থ একজন প্রার্থী সেই অঙ্গরাজ্যের সবকটি ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ ভোট পেয়ে যাবেন। ইলেকটোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮। মাইন ও নেব্রাসকা এই দুটো অঙ্গরাজ্য বাদে বাকি সবগুলো রাজ্যের ইলেকটোরাল ভোট যোগ দিলে যে প্রার্থী ২৭০টি বা তারও বেশি ভোট পাবেন তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। সেই প্রার্থীর রানিং মেট হয়ে যাবেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট। প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের বেশ কয়েকটি করে ইলেক্টোরাল ভোট থাকে, যা ওই অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যার মোটামুটিভাবে সমানুপাতিক হয়। ক্যালিফোর্নিয়ার হাতে সর্বাধিক ৫৪টি, এবং ভায়োমিং, আলাস্কা এবং নর্থ ডাকোটা (এবং ওয়াশিংটন ডিসি)-র মতো যেসব অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যা খুবই কম, তাদের হাতে অন্তত তিনটি ইলেক্টোরাল ভোট আছে। সাধারণত অঙ্গরাজ্যগুলো তাদের হাতে থাকা ইলেক্টোরাল ভোট সেই প্রার্থীকেই দেয়, যিনি ওই অঙ্গরাজ্যের ভোটারদের সরাসরি ভোটে জয়ী হয়েছেন। ধরা যাক, টেক্সাসে একজন প্রার্থী ভোটারদের সরাসরি ভোটের ৫০.১% পেয়েছেন, তাকে ওই অঙ্গরাজ্যের হাতে থাকা ৪০টি ইলেক্টোরাল ভোটের সবগুলিই সেই প্রার্থী পেয়ে যাবেন। একটি অঙ্গরাজ্যে জয়ের ব্যবধান যদি বিরাট হয়ও, তাহলেও জয়ী প্রার্থী অতগুলি ইলেক্টোরাল ভোটই পাবেন। তবে একজন প্রার্থী সারা দেশে হয়ত কম ভোট পেয়েছেন, কিন্তু বেশ কতগুলি কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়ে একজন প্রেসিডেন্ট হয়ে যেতে পারেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৬ সালে হিলারি ক্লিনটনের থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ কম ভোট পেয়েও মিসেস ক্লিনটনকে পরাজিত করেছিলেন। জর্জ ডব্লিউ বুশ ২০০০ সালে আল গোরকে পরাজিত করেছিলেন, যদিও সাধারণ ভোটে তার জয়ের ব্যবধান ছিল পাঁচ লক্ষেরও বেশি। ওই দুজনের আগে আর মাত্র তিনজন সাধারণ ভোটে না জিতেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তবে সেগুলি উনবিংশ শতাব্দীর ঘটনা। একেক রাজ্যের হাতে একেক সংখ্যক ভোট থাকার কারণে প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী প্রচারণার ব্যাপারে এমনভাবে ছক তৈরি করেন যেখানে তারা বেশি ভোট আছে এমন রাজ্যগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। ‘কলেজ’ শব্দটির অর্থ এখানে সেই ব্যক্তিদের বোঝানো হয়, যারা একটি অঙ্গরাজ্যের ভোট দেওয়ার অধিকারী। 'ইলেকটোরাল কলেজ' হচ্ছে কর্মকর্তাদের একটি প্যানেল, যাদের 'ইলেকটরস্' বলা হয়। এরা এক কথায় নির্বাচক মণ্ডলী। প্রতি চার বছর পর পর এটি গঠন করা হয়, এবং এরাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টকে বাছাই করেন। কংগ্রেসে প্রতিনিধিত্বের অনুপাতে প্রতিটি স্টেটের ইলেকটরসের সংখ্যা নির্ধারিত হয়: যা নির্ধারিত হয় স্টেটে সেনেটরের সংখ্যা (প্রত্যেক স্টেটে দুইজন) এবং প্রতিনিধি পরিষদে প্রতিনিধির (যা জনসংখ্যার অনুপাতে) যোগফল মিলে। ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতি অনুযায়ী যেসব রাজ্যে জনসংখ্যা বেশি, সেসব রাজ্যে ইলেকটোরাল ভোটও বেশি। এই প্রথা শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্যই ব্যবহৃত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অন্য সব নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয় সরাসরি মানুষের ভোটেই।

post
আন্তর্জাতিক

বিশ্বনেতাদের সমর্থন কার দিকে, কমলা নাকি ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কে হতে যাচ্ছেন, তার ওপর নজর পুরো বিশ্বের। কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প যিনিই ক্ষমতায় আসুন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে, তা নিয়ে ভাবছেন বিশ্বনেতারা। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁদের পছন্দের প্রার্থী কে, তা নিয়ে অনেক আলোচনা রয়েছে। এ তালিকায় সবার আগে আসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নাম। তিনি হোয়াইট হাউসে কাকে দেখতে চান? পুতিনের পক্ষ থেকে মজা করে কমলাকে পছন্দের কথা বলা হলেও তাঁর পছন্দের মানুষ যে ট্রাম্প, তার অনেক ইঙ্গিত দেখা গেছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসের রাশিয়া এবং ইউরেশিয়া প্রোগ্রামের সহযোগী ফেলো টিমোথি অ্যাশ আল-জাজিরাকে বলেছেন, পুতিন নানা কারণে ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পছন্দ করতে পারেন। প্রথমত, পুতিন মনে করেন ট্রাম্প রাশিয়ার প্রতি নমনীয় এবং ইউক্রেনের সঙ্গে একটি ভালো চুক্তিতে সহায়তা করবেন। এ ছাড়া ইউক্রেনকে সহায়তা বন্ধ ও রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবেন।অ্যাশ বলেন, ‘আমি মনে করি, ট্রাম্পের মধ্যে নিজের কর্তৃত্ববাদী হিসেবে নিজের ছবি দেখেন পুতিন। তিনি মনে করেন, ট্রাম্পকে তিনি বুঝতে পারেন।’ তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যেই জিতুন, মস্কো মনে করে, রাশিয়ার প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি একই থাকবে। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং সরাসরি কমলা বা ট্রাম্প কাউকেই সমর্থন দেননি। রাশিয়ার সঙ্গে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দলই চীনের প্রতি কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ট্রাম্পের সময় চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। তাই আবার ট্রাম্প জিতলে সে পরিস্থিতি তৈরি হবে। ডেমোক্র্যাটরাও এখন বিশ্বজুড়ে চীনের প্রভাব কমাতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে বাণিজ্যযুদ্ধ থাকলেও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখতে চেয়েছেন ট্রাম্প। গত ১৪ জুলাই ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ঘটনার পর বিশ্বনেতাদের অনেকেই তাঁকে বার্তা দিয়েছিলেন। ওই সময় সি চিন পিংয়ের বার্তাও পেয়েছিলেন তিনি। সির বার্তা ট্রাম্প পেলেও চীনের কর্মকর্তারা আবার কমলাঘেঁষা বেশি। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী কাউকে সরাসরি সমর্থন না করলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্পের প্রতিই ঝুঁকে রয়েছেন তিনি। ইউরোপের নেতাদের মধ্যে অনেকেই এবার কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দিয়েছেন। কারণ, ট্রাম্প পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ কমলাকে সমর্থন করে বলেছেন, ‘আমি তাঁকে ভালোভাবে চিনি। তিনি দারুণ প্রেসিডেন্ট হবেন।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক অনেক ঘনিষ্ঠ। কিছুদিন আগেও ট্রাম্প মোদিকে প্রশংসা করে টুইট করেছেন। তবে চ্যাথাম হাউসের দক্ষিণ এশিয়ার জ্যেষ্ঠ রিসার্চ ফেলো চৈতজ্ঞ বাজপেয়ী বলেন, ‘আমি মনে করি না, মোদির কোনো পছন্দের প্রার্থী আছেন। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে দুই দলেরই মত রয়েছে।’ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল কাউকেই সরাসরি সমর্থন দেননি। তবে বাইডেন প্রশাসনের অধীনে দুই দেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়েছে। ট্রাম্পের সময় কোরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষায় খরচ না বাড়ানোর অভিযোগ করা হয়েছিল। জাপানের পক্ষে ট্রাম্প জয়ী হলে তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা কমবে। ট্রাম্প শুল্ক বাড়াবেন এবং জাপানকে সামরিক বাজেট বাড়াতে বলবেন। কমলা প্রেসিডেন্ট হলে তাদের নীতি ধারাবাহিকভাবে চালু থাকবে। অস্ট্রেলিয়ার জন্য ট্রাম্প জয়ী হলে নানা প্রশ্ন উঠবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তাই ট্রাম্পের পক্ষে তাদের না যাওয়াই স্বাভাবিক।

post
আন্তর্জাতিক

গাজায় স্কুলে ইসরায়েলের হামলা, নিহত অন্তত ২২

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় কমপক্ষে আরও ২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। ইসরায়েল মধ্য গাজার একটি স্কুলে হামলা চালালে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।হামলার শিকার স্কুলটিতে ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছিল। সোমবার (১৪ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মধ্য গাজার নুসেইরাতে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত একটি স্কুলে ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলাবর্ষণে ২২ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে এবং আরও ৮০ জন আহত হয়েছেন।গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি বলেছে, নুসেইরাত ক্যাম্পের এই স্কুলটিতে রোববার ব্যাপক আর্টিলারি হামলা চালানো হয়। বর্বর এই হামলায় অনেক পুরো পরিবার নিহত হয়েছে এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) বলছে, তারা এই প্রতিবেদনগুলো খতিয়ে দেখছে।এর আগে গাজার উত্তরাঞ্চলে রাস্তার মোড়ে খেলার সময় ড্রোন হামলায় পাঁচ শিশু নিহত হয় বলে জানা গেছে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪২ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৯৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।

post
আন্তর্জাতিক

ডাক্তারদের কর্মবিরতি, বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন ২৯ জন

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আরজি কর হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ও অন্যান্য দাবি নিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাদের এই কর্মবিরতির কারণে রাজ্যটিতে বিনা চিকিৎসায় ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাওয়া এসব মানুষের পরিবারকে ২ লক্ষ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন মমতা।এ ব্যাপারে মমতা বলেছেন, ‘‘জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। এতে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার দু’লক্ষ রুপি আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করছে। ২৯ জন মৃতের পরিবারকে ওই টাকা দেওয়া হবে।’’ তবে ডাক্তাররা মমতার এই দাবি অস্বীকার করেছেন। তারা বলছেন কোথাও চিকিৎসা সেবা থেমে নেই। সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছেন এবং কেউ বিনা চিকিৎসায় মারা যাননি।গতকাল বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে ডাক্তারদের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাদের দাবি না মানায় বৈঠকটি হয়নি। ডাক্তাররা দাবি করেছিলেন মমতার সঙ্গে যে বৈঠকটি তাদের হবে সেটি সরাসরি সম্প্রচারকরতে হবে। কিন্তু রাজ্যের সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় যেহেতু বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে তাই এ সংক্রান্ত বৈঠক সরাসরি সম্প্রচার করতে দেওয়া সম্ভব নয়। দাবি না মানায় তারা মমতার সঙ্গে দেখা না করেই চলে যান। এরপর তিনি জানান, জনস্বার্থে প্রয়োজনে পদত্যাগ করবেন তিনি। তাও তিনি চান সাধারণ মানুষ যেন চিকিৎসা পায়।

About Us

NRBC is an open news and tele video entertainment platform for non-residential Bengali network across the globe with no-business vision just to deliver news to the Bengali community.