post
নারী ও শিশু

বিশ্বকে গৃহহীনতার অভিশাপ মুক্ত করার আহ্বান শেখ হাসিনার

শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তুলে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষকে ‘গৃহহীনতার অভিশাপ’ মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বুধবার (সেপ্টেম্বর ২১) স্থানীয় সময় সকালে নিউইয়র্কে হোটেল লোটে প্যালেসে ‘টেকসই গৃহায়ন’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর‌্যায়ের সাইড ইভেন্টে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রকৃতপক্ষে গৃহহীনতা একটা অভিশাপ। এটি উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় মানুষকে এই অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে কিছু করার বিষয়টি আমাদের সক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে। এক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী অংশদারিত্ব গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন শেখ হাসিনা বলেন, এটি করতে (গৃহহীনতার অভিশাপ দূর করতে) এখানে জড়ো হওয়া আমাদের সকল বন্ধু এবং অংশীজনরা একটি শক্তিশালী অংশদারিত্ব গড়ে তুলতে পারে। তিনি বলেন, আসুন আমরা সারা বিশ্বের জন্য এক সঙ্গে কাজ করি, যেখানে গৃহহীনতা অতিতের কোন বিষয়ে পরিণত হবে। গৃহহীনদের প্রতি নিজের মমত্ববোধের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি এমন একটি ইস্যু যা আমি আমার হৃদয়ের গভীরে ধরে রেখেছি। আমি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি যে একটি নিরাপদ ও উপযুক্ত আশ্রয় প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার। শেখ হাসিনা বলেন, সারা বিশ্বের মানুষকে গৃহহীনতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করার পথে এগিয়ে যেতে ‘নিউ আর এজেন্‌ডা’ একটি দরকার ‘ব্লু প্রিন্ট’ হিসেবে আমাদের সহায়তা করতে পারে। এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়তাকারী দেশগুলোতে আমাদের অবশ্যই ইউএন-এইচএবিআইটিএটি এর কাজকে সমর্থন করতে হবে। এই ইস্যুটিকে সামনে নিউইয়র্কের বন্ধুদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ঘর দেশের প্রতিটি নাগরিকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক চাহিদা, এটি অন্যান্য চাহিদা পূরনের সুযোগ সৃষ্টি করে। বাংলাদেশে আমরা একটি বাড়িতে শুধু থাকার জায়গা মনে করি না। আবাসনের নিরাপত্তা ব্যক্তির মর‌্যাদার সঙ্গে বসবাসের সঙ্গে অর্থনৈতিক মুক্তিকে ত্বরান্বিত করে। আশ্রায়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে ভুমিহীন-গৃহহীনদের বিনামূল্যে জমি ও ঘর দেওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৬৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ সফলভাবে গৃহহীনতার সমস্যাটি সামলাতে পারে। তিনি বলেন, আমরা গৃহহীন-ভূমিহীনদের বিনামূল্যে জমির সঙ্গে বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছি। সারা দেশে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য টেকসই ঘর নির্মাণে আমাদের সাফল্যের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে আমি এখানে এসেছি। শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে প্রথম ভূমিহীন, গৃহহীন এবং ছিন্নমূল মানুষদের পুর্নবাসনের উদ্যোগ নেন। জাতির পিতার লক্ষ্যকে ধারণ করে ১৯৯৭ সালে আমরা ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষের পুর্নবাসনে আশ্রায়ণ প্রকল্প চালু করি। গত দুই দশকে আমাদের সরকার সবার জন্য বিনামূল্যে আবাসন নিশ্চিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু গত ২ বছরে আমরা ২ লাখ বাড়ি নির্মাণ করেছি, যেখানে ১ মিলিয়নের বেশি মানুষের আবাসন নিশ্চিত হয়েছে। আমার প্রধানমন্ত্রীত্বের ১৮ বছরে ৫ লাখেরও বেশি বাড়ি নির্মাণের মাধ্যমে আমরা সাড়ে তিন মিলিয়নেরও বেশি মানুষের আবাসনের ব্যবস্থা করেছি। বর্তমানে আরও ৪০ হাজার বাড়ি নির্মাণের কাজ চলছে। আশ্রায়ণ প্রকল্পের বাড়ি গুলোর বৈশিষ্ট তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় প্রত্যেক পরিবার দুটি বেড রুম, একটি লম্বা বারান্দা, একটি রান্নাঘর, একটি স্যানিটারি ল্যাট্রিনসহ ৪০০ স্কয়ার ফুটের একটি পাকা বাড়ির মালিকানা পাচ্ছে। আমরা প্রতিটি বাড়িতে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, সুপেয় পানি সরবরাহ করছি। পর‌্যাপ্ত বাড়ির আঙ্গিনাসহ আমরা বিনামূল্যে বাড়ি এবং জমি দিচ্ছি, এটি পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যন্য। প্রধানমন্ত্রী জানান, এসব বাড়ির সুবিধাভোগীরা হলেন- ভূমিহীন-গৃহহীন, ভিক্ষুক, দিনমজুর, নিঃস্ব নারী, বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, বয়স্ক-জন, পারিবারিক সহিংসতার শিকার, জাতিগত সংখ্যালঘু, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ, কুষ্ঠ রোগী, ঝাড়ুদার এবং হরিজন সম্প্রদায়। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকেও একই ভাবে পুর্নবাসন করছি। ইতিমধ্যে কক্সবাজারে ১৩৯টি বহুতল ভবনে ৫ হাজার জলবায়ু-শরণার্থী পরিবারকে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশ্রায়ণ প্রকল্পের কারণে গৃহহীনদের শহরমুখী হওয়ার প্রবণতা কমেছে জানিযে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গৃহহীন মানুষ কর্মসংস্থান এবং বাসস্থানের সন্ধানে শহরে ছুটে আসতো, আগে বাংলাদেশে এটি সাধারণ দৃশ্য ছিল। কিন্তু আশ্রায়ণ প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে এই প্রবণতা প্রায় বন্ধ হযে গেছে। শেখ হাসিনা বলেন, এসব মানুষ এখন তাদের নিজেদের এলাকা স্ব-কর্মসংস্থান করছে। আমরা ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন’ মডেলটি অনুসরণ করছি। এই মডেলটি একজন পুর্নবাসিত ব্যক্তিকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নের সঙ্গে সঙ্গে আত্মনির্ভরশীল এবং আত্মমর‌্যাদা সম্পন্ন করে গড়ে তোলে। এই প্রকল্পে স্বামী এবং স্ত্রী উভয়ের জন্য জমি এবং বাড়ির মালিকানার সমান অংশদারিত্ব নিশ্চিত করে।

post
নারী ও শিশু

'মা দিবস', কীভাবে এলো, কোথায় যাচ্ছে!

একটি 'মা দিবস' গেলো রবিবার। এবছর দিবসটি উদযাপন হলো ৮ মে, মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার। মা দিবস বিশ্বের সকল মায়ের জন্য একটি বিশেষ দিন।মায়ের অবদান মানুষের জীবনে ঠিক কতটা তা বোঝানো যায় না। কিন্তু এই মায়ের অবদানটাই ঠিক যেনো আমাদের চোখে পড়ে না। এই দিনটিকে প্রতিটি সন্তানের জন্য মায়ের সেই অমূল্য, নিঃস্বার্থ ভালোবাসার কথা স্বীকার করে নেওয়ার দিন হিসেবেই বিশ্বে পালন করা হয়। আর এই দিনটি সেই অবদানের জন্য মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো ধন্যবাদ জানানোরও দিন। মানবকূলে সকল সম্পর্কের সেরা সম্পর্কটিই হচ্ছে মা ও তার সন্তানের সম্পর্ক। সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা আর কিছুর সঙ্গেই তুল্য নয়। একটি শিশু জন্ম নেওয়ার পর থেকে মা তার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে শিশুর নিরাপত্তা ও ভালো থাকা নিশ্চিত করতে আত্মনিয়োজন করেন। আর এই মায়ের হাতেই গড়ে ওঠে সন্তানের জীবন। জীবনের সকল দুঃখ সঙ্কট থেকে সন্তানকে মুক্ত রাখতে মা থাকেন বদ্ধপরিকর। আর মায়ের সেই সব অবদানের কথা স্বীকার করতে এবং তারই উদযাপন করতে এই মা দিবস। বিশ্বের দেশে দেশেই এই মা দিবস উদযাপন হয়। তবে বিশ্বের সব দেশে দিবসটি একই দিনে নয়। অনেক দেশে দিনটি উদযাপন হয় মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার। সেই হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র দিনটি উদযাপন হয়ে গেলো গতকাল ৮ মে। বাংলাদেশেও তাই। কীভাবে এলো মা দিবস সেটি ১৯০৭ সালের কথা। সে বছর যুক্তরাষ্ট্রের এক নারী, নাম আনা জারভিস, সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি তার মায়ের স্মরণে মাদার'স ডে পালন করবেন। তার দুই বছর আগে মাকে হারিয়েছিলেন আনা। সেখান থেকে শুরু। এরপর অনেকেই এই দিনটি পালন শুরু করে। আর ১৯১৪ সালে প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন দিবসটিকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন। তবে বিশ্বের অনেক দেশে সভ্যতায় মাতৃত্বের বন্দনা ও উদযাপনের রেওয়াজ আরও পুরোনা। কোথাও কোথাও এর রয়েছে হাজার হাজার বছরের ইতিহাস। যেমন গ্রিক সভ্যতায় রোমান ফেস্টিভাল অব হিলারিয়া, ক্রিশ্চিয়ান মাদারিং সানডে সেলিব্রেশন এসব উৎসবকেও মা দিবসের সাথে মিলিয়ে নেয় অনেক দেশ। যেমন যুক্তরাজ্য। যুক্তরাষ্ট্রে ১৯০৭ সালে আনা জারভিস তার মায়ের জন্য ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গ্র্যাফটনে এন্ড্রুস মেথোডিস্ট এপিসকোপ্যাল চার্চে প্রার্থণাসভার আয়োজন করেন। পরে আনা একটি মাদার'স ডে ওয়ার্ক ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন যার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হতো। পরে আনা জারভিস দিবসটি 'মাদার'স ডে ফর পিস' হিসেবে নামকরণের দাবি তোলেন, যে দিনটিতে মায়েরা এই দাবি নিয়ে সামনে আসবেন যেনো তাদের স্বামী ও সন্তানদের আর যুদ্ধে প্রাণ দিতে না হয়। এই আন্দোলনে জেরভিসের সঙ্গে ছিলেন জুলিয়া ওয়ার্ড হোয়ি নামে এক পিস অ্যাক্টিভিস্ট। দিনটিকে তারা সকল মায়ের সম্মানে নিবেদিত করতে চেয়েছিলেন। কারণ তারা বিশ্বাস করেন, পৃথিবীতে কারো জন্য তার মায়ের চেয়ে বেশি অবদান কেউ রাখতে পারে না। ১৯০৮ সালেই দিবসটি সরকারি ছুটির দিন হিসেবে চেয়ে কংগ্রেসে প্রস্তাব ওঠে, কিন্তু তা নাকচ হয়ে যায়। আর এ সময় কংগ্রেসম্যানরা এই কৌতুক করতেও ছাড়েন না যে, এটা করা হলে এক সময় তাদের মাদার-ইন-ল'জ ডে (শাশুড়ি দিবস) ও করতে হবে। কিন্তু হাল ছাড়েননি আনা জারভিস। ১৯১১ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যগুলো দিনটিকে মাদার'স ডে হিসেবে পালন করতে শুরু করে। আর ১৯১৪ সালে প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মায়েদের সম্মানে দিনটিকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে দেওয়া ঘোষণাপত্রে সই করেন। আনা জারভিসের ইচ্ছা ছিলো স্রেফ দিনটিতে মায়ের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা জানানো, তার অবদানকে স্বীকার করে নেওয়ার । কিন্তু ১৯২০ এর দশকের গোড়ার দিকেই হলমার্ক কার্ডস বাজারে নিয়ে এলো মাদার'স ডে কার্ড। সেই শুরু। কোম্পানিগুলো দিনটিকে তাদের বাণিজ্যের সুযোগ হিসেবেই প্রতিষ্ঠা করতে লাগলো। বিষয়টি আনা জারভিস ভালোভাবে নেননি। জীবদ্দশায় বিভিন্ন সময়ে তিনি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি এতটাই প্রতিবাদী ছিলেন যে, শেষ পর্যন্ত তাকে গ্রেফতারও হতে হয় এ জন্য। বাণিজ্যিকীকরণের পরেও বিশ্বের দেশে দেশ দিনটি উদযাপন করা হয় অতি আন্তরিকতায়। বাংলাদেশেও মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারে উদযাপন হয় মা দিবস। সবাইকে মা দিবসের শুভেচ্ছা।

post
নারী ও শিশু

আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ

আজ ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিনটি নানান আনুষ্ঠানিকতায় উদযাপিত হচ্ছে। নারীর অধিকার রক্ষায় বিশ্বব্যাপী সমতাভিত্তিক সমাজ-রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে প্রতিবছর এই দিনে দিবসটি উদযাপন করা হয়। জাতিসংঘ ২০২২ সালের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘নারীর সুস্বাস্থ্য ও জাগরণ।’ এই মূল প্রতিপাদ্যের আলোকে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে- ‘টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য।’ দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। ‘টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য’ দিবসের এই প্রতিপাদ্যটিকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত সময়োপযোগী উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৯(৩) অনুচ্ছেদে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ও সুযোগের সমতা রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। নারীদের যথার্থ মর্যাদা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকার নারী শিক্ষার বিস্তার, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারীর ক্ষমতায়নসহ নারীর প্রতি সকল ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। রাষ্ট্রপতি দেশের উন্নয়নকে টেকসই করতে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে সহযাত্রী হিসেবে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তার আশা একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বিশ্ব গড়ার কাজে পুরুষের মতো সমান অবদান রাখার প্রত্যয় নিয়ে নারীর এগিয়ে চলা আগামীতে আরো বেগবান হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে পৃথক এক বাণীতে বিশ্বের সকল নারীর প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, নারী তার মেধা ও শ্রম দিয়ে যুগে যুগে সভ্যতার সকল অগ্রগতি এবং উন্নয়নে সমঅংশীদারিত্ব নিশ্চিত করেছে। সারাবিশ্বে তাই আজ বদলে গেছে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি। এখন নারীর কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বীকৃতি। তিনি বলেন, এদেশের নারী-পরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যেমন আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, তেমনিভাবে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলাও সম্ভব হবে। উল্লেখ্য, নারী দিবস উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকরা। সেই মিছিলে চলে সরকারের লাঠিয়াল বাহিনীর দমন-পীড়ন। ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ; জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। এরপর ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বৎসর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। বাংলাদেশেও ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার লাভের পূর্ব থেকেই এই দিবসটি পালিত হতে শুরু করে। এরপর ১৯৭৫ সালে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এরপর থেকে সারা পৃথিবী জুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার অভীপ্সা নিয়ে।

post
নারী ও শিশু

দ.আফ্রিকায় ডাকাতির শিকার বাংলাদেশের আজমেরী

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ডাকাতির শিকার হয়েছেন বাংলাদেশের সবুজ পাসপোর্ট নিয়ে ১১৯ দেশ ভ্রমণ করা খুলনার মেয়ে কাজী আসমা আজমেরী। গত শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ১২০তম দেশ বতসোয়ানা ভ্রমণের উদ্দেশে বের হয়ে জোহানেসবার্গে ট্রাফিক সিগনালে এ ডাকাতির শিকার হন তিনি। জানা যায়, ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ১১৬তম দেশ ভ্রমণের উদ্দেশে লেবাননে যান ভ্রমণ কন্যা কাজী আসমা আজমেরী। এরপর সেখান থেকে আরও কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করে অবস্থান করেন আফ্রিকায়। সেখান থেকে তিনি ট্যাক্সি ভাড়া করে বতসোয়ানার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। তবে আফ্রিকার জোহনসবার্গে গান্ধী স্কয়ার ঘুরতে বের হন। সেখানে যেতে চার বন্দুকধারী তাকে বহনকারী ট্যাক্সি থামিয়ে সবকিছু লুট করে নেন। ভ্রমণ করতে গিয়েও এর আগে বিভিন্ন বাধা বিপত্তির শিকার হয়েছেন তিনি। তবে তার সঙ্গে ঘটা ডাকাতির ঘটনাটি একটি লোমহর্ষক অভিজ্ঞতা হিসেবে বর্ণনা দেন তিনি। আজমেরি বলেন, ১২০তম দেশ বতসোয়ানা ভ্রমণের উদ্দেশে বের হয়েছিলাম। জোহানেসবার্গে ট্রাফিক সিগন্যালে হঠাৎ করে চারজন বন্দকধারী এসে ট্যাক্সি থামিয়ে ড্রাইভারকে নির্দেশ দেন গাড়ির দরজা খোলার। গাড়ির দরজা খুলে দিলে তারা আমার সব টাকা, ফোন, পেছনের সিটে ব্যাকপ্যাক, ক্যামেরা, জ্যাকেট জামা এবং আরও অনেক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও আমার গ্রিন টি-শার্ট, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাও নিয়ে যায়। পরে অনেক আকুতি-মিনতি করার পর আমার পাসপোর্ট তারা ফেরত দেয়। ১ ফেব্রুয়ারির ১১৯তম দেশ লেসোথো আফ্রিকার পিটুরিয়াতে আসেন নামিবিয়ার ভিসা নেওয়ার জন্য। ৩ ফেব্রুয়ারি বসোনিয়ায় চলে যাওয়ার কথা থাকলেও এক বাঙালির বাসায় দাওয়াত থাকায় একদিন থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি রওনা দেন। দেশ ভ্রমণের যাত্রা পথেই এই ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে। আর বিষয়টি নিয়ে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে এমনটিই জানিয়েছেন তিনি। তার সব টাকা-পয়সা, ব্যাগ সবকিছু নিয়েছে ডাকাতরা। যার মূল্য প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। সবকিছু হারিয়ে ভ্রমণকন্যা আজমেরী একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। সেখানে কয়েকটি পরিবার তাকে সাহায্য করেন। তাকে হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করে দেন তারা এবং প্লেনের টিকেট কেটে জোহানেসবার্গ থেকে কেপটাউনে আসতে সহায়তা করেন। বর্তমানে সেখানে তিনি বেশ অর্থকষ্টে আছেন। কাজী আসমা আজমেরী বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিয়ে বিশ্বভ্রমণে বের হয়ে এর আগে জেলও খাটেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ১১৫তম দেশ গ্রিসে লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে দেশে ফেরেন তিনি।

About Us

NRBC is an open news and tele video entertainment platform for non-residential Bengali network across the globe with no-business vision just to deliver news to the Bengali community.