post
ক্যাম্পাস লাইফ

লাইলাতুল কদর ও এ রাতের করণীয়?

পবিত্র কোরআনুল কারীমে ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয়ই আমি তা (কোরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। আর কদরের রাত সম্পর্কে তুমি কী জান? কদরের রাত সহস্র মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফেরেশতাগণ ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তি বিরাজ করে ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত।  স্বাভাবিকভাবেই এ জায়গাটিতে এসে পৃথিবীর যেকোনো বিবেকবান, সজাগ ও সচেতন মানুষ স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়াবে। একটি রাতÑ যে রাতের মূল্য আল্লাহ জাল্লা জালালুহুর কাছে হাজার মাসের চাইতে উত্তম। অর্থাৎ তিরাশি বছরেরও বেশি সময় থেকে উত্তম। এ রাতটি যদি কোনো ব্যক্তি ইবাদত বন্দেগি ও সৎ কল্যাণ সাধনার ভেতর দিয়ে পালন করতে পারে তাহলে সে ব্যক্তি যেন তিরাশি বছরেরও বেশি সময় সৎ ও কল্যাণ সাধনার ভেতর দিয়ে পার করল। এটা খুব সহজ কথা নয়। আমরা যারা এ মাটির পৃথিবীতে বাস করি আমরা খুব ভালো করে জানি একজন ব্যক্তি একটি মাসও নিশ্চিদ্রভাবে কল্যাণ কর্মের ভেতর দিয়ে পার করতে পারে না। তাকে নানা রকমরে বাঁধা ও প্রতিকূলতার ভেতর দিয়ে পার করতে হয়। নানা রকমের অন্যায়ের ভেতরে পড়তে হয় ইচ্ছায় কী অনিচ্ছায়। কিন্তু একটি রাতে যদি কোনো মানুষ স্বপথে বলিয়ান হয় এবং সে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়—রাতটি সে ভালোর ভেতর দিয়ে কাটাবে তাহলে এটা কোনো অস্বাভাকি বিষয় নয়। অথচ আল্লাহ জাল্লা জালালুহু সুযোগ করে দিয়েছেন যদি কেউ এ রাতটি কল্যাণ কামনার ভেতর দিয়ে কাটাতে পারে সে এ কল্যাণের অধিকারী হতে পারে। এক মহা সুযোগ মানুষের জন্য এ রজনীটি।অপরদিকে এ রাতে অজ¯্র ধারায় আল্লাহর খাস রহমত বর্ষিত হয়। এ রাতে এত অধিকসংখ্যক রহমতের ফেরেশতা পৃথিবীতে অবতরণ করেন যে, সকাল না হওয়া পর্যন্ত এক অনন্য শান্তি বিরাজ করতে থাকে। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, শবে কদরে হযরত জিবরাঈল (আ.) ফেরেশতাদের বিরাট এক দল নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং যত নারী-পুরুষ নামাযরত অথবা জিকিরে মশগুল থাকে, তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন।  হাদীসে এসেছে, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াব হাসিলের উদ্দেশ্যে কদরের রাতে দ-ায়মান হয়, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।  একজন সচেতন, একজন পরকাল বিশ^াসী এবং নিজের জীবনের সফলতার স্বপথে বলিয়ান মানুষের জন্য এ যে কত বড় কল্যাণের বার্তা ও নিমন্ত্রণ তা আমরা স্বাভাবিকভাবে চিন্তা করে কুলিয়ে উঠতে পারব না। কবে এ রজনী?যে রাতটি লাইলাতুল কদর হবে, সেটি বোঝার কিছু আলামত হাদীসে বর্ণিত আছে। সেগুলো হলো—  ১. এ রাতটি রমযান মাসে নিহিত।  ২. এ রাতটি রমযানের শেষ দশকে রয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অর্থ : রমযানের শেষ দশদিনে তোমরা কদরের রাত তালাশ করো। ৩. এটি রমযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অর্থ : তোমরা রমযানের শেষ দশদিনের বেজোড় রাতগুলোতে কদরের রাত খোঁজ করো।  ৪. এ রাত রমযানের শেষ সাত দিনে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ৫. রমযানের ২৭ রজনী লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। উবাই ইবনে কাব রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, আল্লাহর শপথ করে বলছি, আমি যতদূর জানি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের যে রজনীকে ‘কদরের রাত’ হিসেবে কিয়ামুল্লাইল করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা হলো রমযানের ২৭ তম রাত।  ৬. কদরের রাত হওয়ার ব্যাপারে সম্ভাবনার দিক থেকে পরবর্তী দ্বিতীয় সম্ভাবনা ২৫ তারিখ, তৃতীয় ২৯, চতুর্থ ২১ এবং পঞ্চম হলো ২৩ তারিখের রজনী।  ৭. সর্বশেষ আরেকটি মত হলো, মহিমান্বিত এ রজনীটি স্থানান্তরশীল। অর্থাৎ প্রতিবছর একই তারিখে বা একই রজনীতে তা হয় না এবং শুধু ২৭ তারিখেই এ রাতটি আসবে তা নির্ধারিত নয়। আল্লাহর হেকমত ও তাঁর ইচ্ছায় কোনো বছর তা ২৫ তারিখে, কোনো বছর ২৩ তারিখে, কোনো বছর ২১ তারিখে, আবার কোনো বছর ২৯ তারিখেও হয়ে থাকে।  ৮. রাতটি গভীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে না এবং নাতিশীতোষ্ণ হবে। অর্থাৎ গরম বা শীতের তীব্রতা থাকবে না।  ৯. মৃদুমন্দ বাতাস প্রবাহিত হতে থাকবে এবং সে রাতে ইবাদত করে মানুষ অপেক্ষাকৃত অধিক তৃপ্তিবোধ করবে। ১০. কোনো ঈমানদার ব্যক্তিকে আল্লাহ স্বপ্নে হয়তো তা জানিয়েও দিতে পারেন। ১১. ওই রাতে বৃষ্টি হতে পারে। ১২. সকালে হালকা আলোকরশ্মিসহ সূর্যোদয় হবে, যা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মতো। এই রাতকে লাইলাতুল কদর বলা হয় কেন?শব ফারসি শব্দ, এর অর্থ রাত। আর কদর অর্থ নিবারণ করা বা মর্যাদা। পবিত্র কোরআনে রাতটিকে নাম দেওয়া হয়েছে লাইলাতুল কদর। আরবী লাইলাতুন অর্থ রাত। তাহলে শবে কদর বা লাইলাতুল কদরের অর্থ দাঁড়ায় নিবারণের রাত বা মর্যাদার রাত। এ রাতে মহান আল্লাহ সৃষ্টিকুলের আগামী এক বছরের ভাগ্যলিপি ফেরেশতাদের হাতে অর্পণ করেন, সে জন্য অথবা যেসব ব্যক্তি নিজেদের গুনাহর কারণে মূল্যহীন ছিল, তারা এ রাতের ইবাদত-বন্দেগি আর তাওবা-ইস্তেগফারের মাধ্যমে মহান আল্লাহর দরবারে উঁচু মার্যাদার অধিকারী হন বলেই এ রাতের নামকরণ করা হয়েছে ‘শবে কদর’ বা ‘লাইলাতুল কদর’। এ রাতের ফজিলতআল্লাহ তাআলা বলেন, অর্থ : রমযান মাস হলো সেই মাস, যাতে নাজিল করা হয়েছে আল-কোরআন, যা মানব জাতির জন্য হেদায়াত ও সুস্পষ্ট পথনির্দেশ এবং ভালো-মন্দ ও ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্যকারী।  মহাগ্রন্থ আল-কোরআন নাজিল হওয়ার কারণে অন্যসব মাস ও দিনের চেয়ে রমযান মাস বেশি ফজিলতময় হয়েছে। আর রমযানের রাতগুলোর মধ্যে কোরআন নাজিলের রাত—লাইলাতুল কদর সবচেয়ে তাৎপর্যম-িত একটি রাত। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, অর্থ : আমি একে নাজিল করেছি কদরের রাতে। তুমি কি জান কদরের রাত কী? কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।  এ আয়াতের ব্যাখায় মুফাসসিরকুল শিরোমণি আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযি.) বলেন, ‘এ রাতের ইবাদত অন্য হাজার মাসের ইবাদতের চেয়ে উত্তম’। তাবেঈ মুজাহিদ (রাযি.) বলেন, এর ভাবার্থ হলো, ‘এ রাতের ইবাদত, তেলাওয়াত, কিয়াম ও অন্যান্য আমল লাইলাতুল কদর ছাড়া হাজার মাস ইবাদতের চেয়েও উত্তম।’ মুফাসসিররা এমনই ব্যাখ্যা করেছেন। আর এটিই সঠিক ব্যাখ্যা। সূরা কদরের শানে নুজুল সম্পর্কে ইবনে কাসির (রাযি.) বলেন, আলী ইবনে উরওয়া (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনি ইসরাঈলের চারজন আবেদ সম্পর্কে বলেছিলেন, তারা আশি বছর ধরে অনবরত আল্লাহর ইবাদত করছিল। এর মধ্যে মুহূর্ত সময়ের জন্যও ইবাদত থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হননি। বিখ্যাত এ চারজন আবেদ হলো আল্লাহর নবী জাকারিয়া (আ.), আইউব (আ.), হাজকিল ইবনে আ’জূজ (আ.) এবং ইউশা ইবনে নূহ (আ.)। এমনটি শুনে সাহাবীরা (রাযি.) রীতিমতো অবাক হলেন। এ সময় জিবরাঈল (আ.) এসে বললেন, ‘হে মুহাম্মদ! আপনার উম্মতরা এ কথা শুনে অবাক হচ্ছে? তাদের জন্য আল্লাহ তাআলা এর চেয়ে উত্তম কিছু রেখেছেন। এরপর সূরা কদর পাঠ করা হয়। কদরের রাতের খোঁজে...একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনি ইসরাঈলের একজন মুজাহিদ সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, তিনি এক হাজার বছর দীর্ঘ হায়াত পেয়েছিলেন। দীর্ঘ এ আয়ুষ্কাল তিনি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে রত ছিলেন। একবারের জন্যও অস্ত্র সংবরণ করেননি। সাহাবায়ে কেরাম (রাযি.) ঘটনা শুনে বিস্মিত হলেন এবং আফসোস করতে লাগলেন যে, বনি ইসরাঈল সুদীর্ঘ হায়াত পাওয়ার কারণে অনেক বেশি ইবাদত-বন্দেগি করতে পেরেছে। অনেক সওয়াব অর্জন করতে পেরেছে। আমাদেরও যদি তাদের মতো দীর্ঘ হায়াত দেওয়া হত, তাহলে আমরা তাদের মতো অনেক ইবাদত করতে পারতাম, অনেক বেশি পুণ্য লাভ করতে পারতাম। এ সময় মহান আল্লাহ সূরা কদর নাজিল করেন এবং বুঝিয়ে দেন যে, যদিও উম্মতে মুহাম্মদিকে হায়াত কম দেওয়া হয়েছে, তথাপি তাদের সওয়াব হাসিলের ও মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের এত বেশি সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যা পূর্ববর্তী কোনো উম্মতকে দেওয়া হয়নি। উম্মতে মুহাম্মদি যদি শুধু একটি রাত (লাইলাতুল কদর) ইবাদত করে, অর্থ : তাহলে তারা এক হাজার মাস ইবাদত করার চেয়েও বেশি সওয়াবপ্রাপ্ত হবে। হযরত আয়েশা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,অর্থ : তোমরা রমযান মাসের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করো।’  তবে রমযান মাসের ২৭তম রাতটি শবে কদর হিসেবে বিশেষভাবে সমগ্র মুসলিম সমাজে পালিত হয়। আর ব্যাপক প্রসিদ্ধ এ মতটিও হাদীস দ্বারা সমর্থিত। কদরের রাত ইবাদতের রাত। তবে নির্দিষ্ট কোনো ইবাদতের জন্য রাতটি নির্ধারিত নয়। যে কোনো ইবাদতই এ রাতে করা যেতে পারে। নফল নামায, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, ইস্তেগফারসহ যেকোনো ইবাদতই করা যেতে পারে। সালাতুত তাসবিহ শবে কদরের জন্য বিশেষভাবে নির্দিষ্ট না হলেও যেহেতু এ নামায আদায়ে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হয়, আর লাইলাতুল কদরে সারা রাতই অধিকাংশ মুসলমান জেগে থাকেন, তাই কদরের রাতে সালাতুত্ তাসবিহ আদায় করা যেতে পারে।  এ রাতটি কীভাবে কাটাতে হবে? এ মহা সৌভাগ্যের রাতটি কীভাবে কাটাতে হবে, কীভাবে পাব, কীভাবে সেটাকে আমরা অধিকার করব তার পথ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এঁকে দেখিয়েছেন। তিনি রমযানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর পাওয়ার জন্য ইতেকাফ করেছেন। ইতেকাফ করে তিনি উম্মতকে শিখিয়েছেন কীভাবে সহজে নিশ্চিন্তে লাইলাতুল কদর অর্জন করতে হয়। তুমি যদি লাইলাতুল কদরকে দখল করতে চাও, অধিকার করতে চাও, তার সমূহ কল্যাণ তোমার জীবনে তুলে আনতে চাও তাহলে সহজ পথ হচ্ছে লাইলাতুল কদর পাওয়ার জন্যে তুমি মসজিদে এসে ইতেকাফ করো। এর ভেতর দিয়ে তিরাশি বছর একাধারে ইবাদত করলে যে পুণ্য অর্জিত হবে এক রাতের ভেতর দিয়েই তা অর্জিত হবে।যদি বিষয়টি সহজভাবে দেখি, একজন মানুষ তার জীবনের ষাট বা সত্তর বছর কাটিয়েছে। কিন্তু সে এ ষাট বা সত্তর বছরে সতর্ক সাধনার ভেতর দিয়ে পেয়েছে মাত্র দু’টো কদর। যদি আমরা সহজ অঙ্কেও চিন্তা করি তাহলে সে এ দু’টো ইতেকাফের মাঝ দিয়ে একশ সত্তর বছরের কাছাকাছি সময় একাধারে নিñিদ্র ইবাদতের ভেতর দিয়ে কাটিয়ে দিলো। এটা কোনো সহজ কিংবা স্বাভাবিক কোনো কথা নয়। আল্লাহ তাআলা বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধি করার তাওফিক দিন। আরও পড়ুন: যাকাত না দেওয়ার পরিণাম ও শাস্তি

post
ক্যাম্পাস লাইফ

"আইগ্লোবাল একটি পরিবার, শিক্ষার্থীদের জন্য এটাই তাদের বাড়ি"

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াস্থ আইগ্লোবাল ইউনিভার্সিটিতে গত ২২ এপ্রিল (শুক্রবার) হয়ে গেলো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীদের অংশগ্রহণে ইফতার আয়োজন। স্টুডেন্টস গভর্নর অ্যাসোসিয়েশন-এসজিএ'র কালচালার ক্লাব ছিলো এর মূল আয়োজনে। আর অংশ নেন বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় শিক্ষার্থীরা। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি প্রখ্যাত সাংবাদিক, ভয়েস অব আমেরিকার বাংলাবিভাগের সাবেক প্রধান রোকেয়া হায়দার শিক্ষার্থীদের জন্য মজাদার সব ইফতারি নিয়ে এসে যোগ দেন। ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপ, প্রেসিডেন্ট ড. হাসান কারাবার্ক, সিএফও ফারহানা হানিপ, এসজিএ প্রেসিডেন্ট সেলিন ইগিত সহ আরও অনেকে। আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয় একটি পরিবার, আন্তর্জাতিক সকল শিক্ষার্থীর জন্য এটাই তাদের বাড়ি, এসময় উঠে আসে তাদের বক্তৃতায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকাংশ ক্লাস অনলাইনে হওয়ায় শিক্ষার্থীদের সামনাসামনি দেখা হওয়ার সুযোগ অপেক্ষাকৃত কম থাকে। এই দিন ছিলো তাদের অনেকেরই ইনপারসন ক্লাস। আর সে কারণে শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাস শেষে যোগ দেয় এই আয়োজনে। এতে ইফতার অনুষ্ঠানটিই হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীদের মিলন মেলা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. জাফর পিরিম-এর উপস্থাপনায় সংক্ষিপ্ত আলোচনায় সম্মানিত অতিথি রোকেয়া হায়দার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি সম্ভাবনার দেশ। এদেশে প্রত্যেকেই তার প্রত্যাশামত অর্জন করে নিতে পারে। তবে সে জন্য শিক্ষালাভটি সবচেয়ে জরুরি। "কেউ কারো বিদ্যা চুরি করে নিতে পারে না, তাই শিক্ষার্থীদের বলবো, আগে শিক্ষা নাও এরপর তারই মাধ্যমে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাও। এই শিক্ষাই হয়ে উঠবে তোমাদের প্রধান সম্পদ," বলেন রোকেয়া হায়দার। একবার যদি কেউ তার লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগুতে থাকে, এই দেশে তার অর্জন করার সকল সুযোগই বর্তমান, যোগ করেন তিনি। "একজন বাংলাদেশি আমেরিকান একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন, এমন একটি বিষয় আমাকে গর্বিত করে," চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপের কথা উল্লেখ করে বলেন এই প্রথিতযশা সাংবাদিক। পরে চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপের বক্তৃতায়ও রোকেয়া হায়দারের কথাগুলো প্রতিধ্বনিত হয়। তিনি বলেন, সকল সুযোগ ও সম্ভাবনা এই দেশে রয়েছে, তবে সবার আগে সকলের প্রাথমিক লক্ষই হওয়া উচিত যোগ্যতা ও মেধার প্রকাশ ঘটিয়ে ডিগ্রি সম্পন্ন করা। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা এই দেশে অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে আসেন। অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, সে স্বপ্নপূরণের পথে কেউ কেউ দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিটিকে সম্পন্ন করে যারা এগিয়েছেন তারাই তাদের স্বপ্নপূরণ করতে পেরেছেন। "সুতরাং শিক্ষার্থীদের বলবো, আগে যথাযথ শিক্ষালাভ, পরে এগিয়ে চলার পথ খোঁজা। আর সেই লক্ষ্যে আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ই হবে সকলের সহায়ক শক্তি," বলেন আবুবকর হানিপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি তার প্রতিষ্ঠিত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান পিপলএনটেকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকবে বিনামূল্যে সফট লার্নিংয়ের সুযোগ। যা তাদের কাঙ্খিত লক্ষে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে, জানান তিনি।  বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান কারাবার্ক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় শক্তিটিই হচ্ছে এর বহু সংস্কৃতি থেকে আসা শিক্ষার্থীরা। আর এই শক্তিটিকে ধারণ করে স্টুডেন্ট গভর্নর অ্যাসোসিয়েশনের কালচারাল টিম যে আয়োজনটি করেছে, তা বহু সংস্কৃতির এই ধারাটিকেই শক্তিশালী করবে। এখানে দৃষ্টিভঙ্গিটি গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসার করে সকল সংস্কৃতির প্রতি উদার মনোভাব পোষণের আহ্বান জানান তিনি। "আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয় একটি পরিবার, শিক্ষার্থীদের জন্য এটাই তাদের বাড়ি," বলেন ড. কারাবার্ক। রমজান শুধু খাবার ভাগাভাগি করে নেওয়াই নয়, আন্তরিকতাকেও পরস্পরের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার শিক্ষা দেয়, বলেন তিনি।নিজের জন্য, পরিবারের জন্য এবং কমিউনিটির জ্ন্য কাজ করতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসিডেন্ট। প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ফারহানা হানিপ বলেন, আমরা যদি সকলে একটি লক্ষ্য সামনে নিয়ে একসঙ্গে পথ চলতে পারি, সাফল্য আসবেই। যুক্তরাষ্ট্রে একটি সুযোগের দেশ, তবে এখানে মূল লক্ষ্য ভিন্ন পথে প্রবাহিত হওয়ার সুযোগও কম নেই। সুতারাং কারে কথায় মিসগাইডেড না হয়ে, শিক্ষার্থীরা যেনো তাদের শিক্ষা অর্জনের প্রতি মনোনিবেশ করে এই আহ্বান জানান ফারহানা হানিপ। ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. জাফর পিরিম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষার জন্য যারা নতুন এই দেশে এসেছে, তারা এখনই কাজের জন্য এলিজিবল নয়, সুতরাং কাজের পেছনে না ছুটে তাদের সকলকে শিক্ষায় মনোনিবেশ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সালমান কোরেশি আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাপদ্ধতি, শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্ককে অনন্য হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় একসময় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য মক্কা হয়ে উঠবে। সকলে একসাথে সমন্বিতভাবে এই লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে।এসজিএ প্রেসিডেন্ট সেলিন ইগিত তার বক্তৃতায় জানান, একাধিক ক্লাব গঠনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম বহির্ভূত কাজগুলো এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সকলের সহযোগিতায় এসজিএ আরও সুদৃঢ়ভাবে কাজ করতে পারবে। এসজিএ সদস্য মো. মুস্তাফিজুর রহমান একটি প্রেজেন্টেশনের মধ্য দিয়ে এসজিএ'র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরেন। আর এসজিএ'র কালচারাল ক্লাবের প্রেসিডেন্ট অমিত গুপ্ত কমিটির পক্ষ থেকে সকলকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে শেষ ভাগে আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিস্টার কনসার্ন প্রতিষ্ঠান পিপলএনটেকের পক্ষ থেকে ছিলো একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন। যেখান তুলে ধরা হয় পিপএল টেক কিভাবে প্রযুক্তিগত দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এখান থেকে প্রযুক্তি দক্ষতা নিয়ে কিভাবে এর প্রশিক্ষণার্থীরা ক্যারিয়ার গড়ছেন সে পরিসংখ্যানও তুলে ধরা হয়। এবং জানিয়ে দেওয়া হয় আইগ্লোবালের শিক্ষার্থীরা পিপলএনটেক থেকে বিনামুল্যে এই স্কিল ডেভেলপমেন্টের কোর্স করতে পারবেন।

post
ক্যাম্পাস লাইফ

আইজিইউ'র সঙ্গে সিটিও ফোরামের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি সংলগ্ন ভার্জিনিয়ায় বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপের মালিকানাধীন ‘ইনোভেটিভ গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি’র সঙ্গে সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের এক সমঝোতা চুক্তি অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) স্থায়ী ক্যাম্পাসে ইনোভেটিভ গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির পক্ষে চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর হানিফ ও সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং তথ্য নিরাপত্তা জোটের মডারেটর তপন কান্তি সরকারের উপস্থিতিতে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আইজিইউ’র চ্যান্সেলর বলেন, যে কোন প্রতিষ্ঠানের গতিশীলতা আনতে এক একটি নতুন উদ্যোগ ও সুন্দর সুন্দর কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এ সমঝোতা চুক্তিটি আমাদের সামনে অগ্রসর হতে আরও সাহায্য করবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, আইজিইউর সিএফও ফারহানা হানিপ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি হাসান কে বার্ক , আইগ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অপারেশন্স ও রেজিস্ট্রার ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাঃ শেন চো সহ আরও অনেকে।

About Us

NRBC is an open news and tele video entertainment platform for non-residential Bengali network across the globe with no-business vision just to deliver news to the Bengali community.