post
যুক্তরাষ্ট্র

নিউইয়র্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী: গৌরব আর ঐতিহ্য পুনরুজ্জীবিত করার সংকল্প

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব আর ঐতিহ্য পুনরুজ্জীবিত করতে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ১৪ হাজার এলামনাই এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনারত ২৪০ শিক্ষকের সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস গ্রহণের উদাত্ত আহবান জানিয়ে নিউইয়র্কে লাগোায়ার্ডিয়া প্লাজা হোটেলের বলরুমে ২৫-২৬ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপনী অনুষ্ঠান হলো।দু’ শতাধিক রেজিস্টার্ড এলামনাইয়ের মনোমুগ্ধকর এ অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণকে অবিকল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যপট উপস্থাপন করা হয়। সাবেক শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করার সময়েই আন্তরিক অভ্যর্থনা জ্ঞাপণে ব্যস্ত ছিলেন হোস্ট সংগঠন ‘ঢাকা বিশ্ববিদালয় এলামনাই এসোসিয়েশন’র যুক্তরাষ্ট্র শাখার নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আকতারুজ্জামান। তিনি তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেমন বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ আলোকিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তেমনি এই প্রাণপ্রিয় শিক্ষালয় থেকে বেরিয়ে হাজারো আলোকিত মানুষগুলো এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গৌরব আরো উজ্জ্বলতর করেছেন দেশে এবং প্রবাসের মাটিতে স্বীয় মহিমায়। তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যাশা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্জন ও প্রাপ্তির গৌরবকে এগিয়ে নিয়ে যাবে ভবিষ্যতের পথে, বিশ্বায়নের স্রোতধারায় যোগ করবে আরো বলিষ্ঠ মাইলফলক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবান্বিত ইতিহাসকে নিয়ে যাবে নতুন উচ্চতায়। আর তা সম্ভব হবে শুধুমাত্র প্রাক্তনদের প্রাণের স্পর্শে, আন্তরিক সহযোগিতায়। অতিথি হিসেবে ছিলেন এলামনাইয়ের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আনোয়ারুল আলম পারভেজ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোল্লা কাওসার, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত এম এ মোহিত, নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল ড. মো. মনিরুল ইসলাম। স্মৃতিচারণের পাশাপাশি সমসাময়িক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত কারিক্যুলাম চালুর পরামর্শ এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যেকার সম্প্রীতির বন্ধন পুন:প্রতিষ্ঠার তাগিদ উচ্চারিত হয় এই চমৎকার সমাবেশের মূল বক্তব্যে এবং তা উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অর্লিন্স ইউনিভার্সিটির এমেরিটাস অধ্যাপক এবং সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ড. মোস্তফা সারওয়ার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবগাথা উপস্থাপনকালে ড. মোস্তফা সারওয়ার বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কালীন ছাত্র ও শিক্ষক হিসেবে গর্বিত। পৃথিবীতে এমন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই যেখানের আত্মত্যাগী ছাত্রদের অবদানে একটি ভাষা বিশ্ব ভাষার মর্যাদা পেয়েছে, একটি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অগ্রগামী সৈনিকের ভূমিকা রেখেছে, এবং স্বৈরতন্ত্রের পতনে রেখেছে নিদারুণ অবদান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই হল একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যেটি এই সব মহান অর্জনে মহিমান্বিত হয়েছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশচুম্বী খরচ বহন করার মত সৌভাগ্য নিয়ে জন্মায়নি এমনি হাজার হাজার ছাত্রদের শিক্ষাদানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেখেছে মহান ভূমিকা। আমি গর্বিত। ড. সারওয়ার উল্লেখ করেন, আজকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিতদের শতকরা কতজন সুহৃদয় চরিত্রবান মানুষ হিসেবে পরিচিত? কতজন ঘুষ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, তোষামোদি, চামচাগিরির মত ঘৃণিত জীবনকে বেছে নিয়েছে? সভ্য দেশগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় বাধ্যতামূলকভাবে এথিকস পড়ানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তা হচ্ছে না কেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে দেখা প্রয়োজন। ড. সারওয়ার আরো বলেন, এককালে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর পৃথিবীতে র‌্যাংকিং কেন নয় শত সাতাত্তর? এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং কেন দু শ তেষট্টি? এই র‌্যাংকিং আপনারা দেখতে পাবেন ইউএস নিউজ এন্ড ওয়ার্ড রিপোর্ট ওয়েব সাইটে। নানাবিধ পরিস্থিতির অসহায় ভিকটিম হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে মেধাবি শিক্ষার্থীর অন্যতম ড. সারওয়ার ক্ষোভের সাথে আরো উল্লেখ করেন, নিয়োগ ও প্রমোশনে দলবাজি, স্বজনপ্রীতি, তোষামোদি, চামচাগিরির প্রভাব কতটা? সুষ্ঠু নিয়োগ ও প্রমোশন হচ্ছে না বলেই কি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড এর আজ এই করুন পরিণতি? অতিথি হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপনকালে যুক্তরাষ্ট্রে সুপ্রিম কোর্টে প্রথম বাংলাদেশী-আমেরিকান এটর্নী ও ডেমক্র্যাটিক পার্টির লিডার মঈন চৌধুরী বলেন, পারিবারিক কোটায় ইমিগ্র্যান্ট হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসবো বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার সুযোগ হয়নি। তবে জেনেছি স্বজনের কাছে তার গৌরবোজ্জল ইতিহাস-ঐতিহ্য। আমার নামে যুক্তরাষ্ট্রে ট্যুরো কলেজে একটি স্কলারশিপ চালু হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তপক্ষের আপত্তি না থাকলে সেখানেই একটি স্কলারশিপ চালু করতে চাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ইমিগ্রেশন বিষয়ক অভিজ্ঞ এটর্নী অশোক কর্মকার বলেন, শতবর্ষের জন্যে অপেক্ষা নয়, প্রতি বছরই এমন আয়োজন করা হলে নিজেদের দায়বদ্ধতা লাঘবের ক্ষেত্র আরো প্রসারিত হবে। কারণ, এখন সময় হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কিছুটা ফেরৎ দেয়ার। সাবেক শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে এ এন্ড এম ইউনিভার্সিটির বায়ো মেডিকেল সায়েন্টিস্ট ড. নাসের বলেন, করোনাকালে সর্বপ্রথম যে কীট আবিস্কৃত হয়, তা বাংলাদেশে পাঠিয়েছি। এরপর ভ্যাকসিনের ব্যাপারেও সম্মিলিত একটি প্রয়াস চালাই। যে দেশটি আমাকে মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে অনেক ত্যাক স্বীকার করেছে, তার জন্যে কিছু করার তাগিদ সব সময় অনুভব করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় প্রেসিডেন্ট আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, একসময় দক্ষিণ এশিয়ার সেরা শিক্ষক ও গবেষকবৃন্দ এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদান ও গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। আজ এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ও গবেষণার মান নিয়ে যখন নেতিবাচক কথাবার্তা শুনি, এর চত্বরে বিসম্বাদ ও হানাহানির ঘটনা ঘটে, তখন কষ্ট পাই আমরা। পারভেজ বলেন, আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার অহংকারের জায়গা নতুনভাবে বর্তমান প্রজন্মের কাছে নিয়ে আসতে পারবে এটাই আমাদের বিশ্বাস। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি এডভোকেট মোল্লা কাওসার বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রগণের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪০ জন শিক্ষকতা করছেন এবং বসতি গড়েছেন আরো ১৪ হাজারের মত। সকলকে এলামনাইয়ের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে পারলে অনেক প্রত্যাশারই বাস্তবায়ন ঘটানো সম্ভব হবে। আয়োজনের প্রধান সমন্বয়কারি মোল্লা মনিরুজ্জামান বলেন, বাঙালি জাতির বৃদ্ধিবৃত্তিক মনন গড়নের ইতিহাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র যে শক্তি ও চেতনার জন্মদিয়েছে, শতবর্ষব্যাপী সেই চেতনার আলো আমাদের ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনকে সমৃদ্ধ করে রেখেছে। ৩৬ বছরের পুরনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার বর্তমান সভাপতি সাঈদা আকতার লিলি বক্তব্যে বলেন, জন্ম থেকেই আমাদের অনেক ঋণ-যা সুধিবার নয়। রয়েছে অনেক দায়িত্ব। পরবর্তী প্রজন্ম এবং পরবর্তী এলামনাইদের জন্য রেখে যেতে হবে সুন্দর মসৃণ পথ। যোগসূত্র তৈরী করতে হবে নবাগতদের সাথে পুরনোদের। আরো আধুনিক চিন্তা-ভাবনার মধ্যদিয়ে সেতুবন্ধ তৈরী করতে হবে শেকড়ের সাথে। আজকের এ সমাবেশ সে তাগিদই দিচ্ছে। উদ্বোধনী ডিনার পার্টির মত সমাপনী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও বাঙালির দিপ্ত প্রত্যয়ে এগিয়ে চলার জয়ধ্বনি উচ্চারিত হয়। প্রাণের সাথে প্রাণ মিশিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি দায়বদ্ধতা মেটানোর সংকল্প ব্যক্ত করার মধ্যদিয়ে দুদিনের অনুষ্ঠানমালা শেষ হয়। হোস্ট কমিটির সদস্য-সচিব গাজী সামসউদ্দিন, কো-কনভেনর মো. তাজুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, এম এস আলম, বিশ্বজিৎ চৌধুরী প্রমুখ-কে অতিথি আপ্যায়ন থেকে উপস্থাপনায় ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করতে দেখা যায়।

post
যুক্তরাষ্ট্র

ছেলের হত্যায় মা গ্রেপ্তার জর্জিয়ায়

২০ মাস বয়সী শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছিলো না গত অক্টোবর থেকে। জর্জিয়ার সাভানাতে নিজ বাড়ি থেকেই শিশুটি হারিয়ে যায়। আর তা পুলিশে রিপোর্ট করে তার মা। এর মাসাধিক কাল পর পুলিশ শিশু ছেলেটির দেহাবশেষ খুঁজে পায় জর্জিয়ার একটি ভরাটকৃত জমিতে। এখন পুলিশ এই ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করেছে তার মাকেই।পুলিশ বলেছে, শিশুটির মা লিলানি সিমনকেগত সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। একই সঙ্গে মরদেহ গুম ও পুলিশে মিথ্যা রিপোর্ট করার মতো অপরাধের অভিযোগও আনা হয়েছে লিলানির বিরুদ্ধে। চাথাম কাউন্টি পুলিশের প্রধান জেফরি হ্যাডলি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ২২ বছর বয়সী এই মা তার ছেলে কুইনটন সিমন হারিয়ে যাওয়ার খবর জানিয়ে পুলিশে রিপোর্ট করেন গত ৫ অক্টোবর। তখনই পুলিশ বিষয়টি নিয়ে একটি টুইট করে। মি. জেফরি বলেন, "ছোট্ট কুইনটনের হারিয়ে যাওয়ার এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ঝড় তোলে। লাখ লাখ মানুষ বিষয়টিতে তাদের উদ্বেগ জানায়। এবং এর একটি সুরাহার অপেক্ষায় ছিলো।" ছেলেটির মাকে চাথাম কাউন্টি কারাগারে রাখা হয়েছে। আর এই ঘটনায় অন্য কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। পুলিশ জানায়, ছেলেটির হারিয়ে যাওয়ার রিপোর্টের পরপরই এফবিআই'র এজেন্টরা ঘটনাস্থলে যান। এছাড়াও বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা ছেলেটিকে খুঁজে বের করার কাজে লেগে পড়ে। পরে ১২ অক্টোবরেই পুলিশ ঘোষণা করে, তারা ধারণা করছে কুইনটনকে হত্যা করা হয়েছে। এবং তার মাকেই রাখা হয়েছে সন্দেহভাজনদের তালিকার শীর্ষে। এরপর গত শুক্রবার পুলিশ জানায়, চাথাম কাউন্টির একটি আবর্জনা ভরাট করা জমিতে শিশুটির লাশ থাকতে পারে এমনটা তারা অনেকাংশেই নিশ্চিত হয়। এরপর সেখানে শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। এফবিআই'র এজেন্টরা ও জর্জিয়া ডিপার্টমেন্ট অব ন্যাচারাল রিসোর্সেস এর কর্মকর্তারা গত ত্রিশ দিন ধরে ফেলা রাখা ১.২ মিলিয়ন পাউন্ড আবর্জনা সরিয়ে কিছু দেহাবশেষ খুঁজে পায়। এরপর সেই দেহাবশেষ ভার্জিনিয়ার কোয়াটিকো ল্যাবে পাঠানো হয়। এছাড়াও দেহাবশেষগুলোর ডিএনএ পরীক্ষা করার উদ্যোগ নেয় এফবিআই। তবে সেই রিপোর্ট আসার আগেই, পুলিশ অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গ্রেপ্তার করে ছেলেটির মা লিলানি সিমনকে। 

post
যুক্তরাষ্ট্র

আগুনে পুড়িয়ে শিশুপুত্রকে হত্যা, ত্রিশ বছর পর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

ফেয়ারচাইল্ড তার নাম। ত্রিশ বছর আগে তার হাতে খুন হয়েছিলো নিজের তিন বছরের শিশুপুত্র। তাও স্রেফ বিছানা ভিজিয়ে ফেলার জন্য। শিশুটিকে সে ধরে রেখেছিলো জ্বলন্ত অগ্নিচুল্লিতে। এরপর ছুঁড়ে মারে এটি টেবিলের ওপর। তাতে মাথায় আঘাত পায় শিশুটি। এরপর আর জ্ঞান ফেরেনি। চির বিদায় নেয় এই পৃথিবীর নিষ্ঠুরতার সাক্ষী হয়ে। হত্যাকারী রিচার্ড ফেয়ারচাইল্ডের বয়স হয়েছিলো ৬৩। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমায় ম্যাকঅ্যালেস্টার পেনিটেনশিয়ারিতে তার মৃত্যূদণ্ড কার্যকর করা হয়। নির্মম সেই ঘটনার ৩০ বছর পর। ১৯৯৩ সালে রিচার্ড হত্যা করে তার শিশুপুত্র অ্যাডাম ব্রুমহলকে। মৃত্যূদণ্ড কার্যকর করার আগে ২৫ ডলারের শেষ খাবার খেতে দেওয়া হয় তাকে। যুক্তরাষ্ট্র মেরিনের সাবেক এই সদস্যকে তার পছন্দ মতো চিজ বার্জার, বড় একপ্যাকেট চিপস, পামকিন পাই, একপিন্ট চকোলেট আইসক্রিম ও একটা বড় কোক খেতে দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে নিজের কর্মকাণ্ডের জন্য অনুতাপ প্রকাশ করেন রিচার্ড। আর বলেন, আজ তার একটুও খারাপ লাগছে না। "আমি ইশ্বরের শান্তিতে আছি। আমার কোনো দুঃখ নেই। কারণ আজ আমি আমার স্বর্গীয় বাবার কাছে যেতে পারবো," এমনটাই বলছিলেন রিচার্ড ফেয়ারচাইল্ড। মামলা চলাকালে প্রসিকিউটররা জানান, ফেয়ারচাইল্ড শিশুটিকে দাউদাউ জ্বলতে থাকা ফারনেসের মধ্যে ধরে রাখেন এরপর শিশুটিকে টেবিলের ওপর ছুঁড়ে মারেন। তিন বছরের শিশুটি সেই যে জ্ঞান হারায় আর কোনোদিন তা ফিরে পায়নি। পরের দিন তার মৃত্যূ হয়। ওকলাহোমার এটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে বলা হয়, অ্যাডামকে হত্যার ঘটনাটিকে নির্মম নিপীড়ণ ছাড়া আর কিছুই বলা চলে না। এদিকে অ্যাডাম ব্রুমহলের চাচা এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তিনি অবাক হয়েছেন এই জেনে যে ফেয়ারচাইল্ড তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, এই নির্মমতার বিচার প্রত্যাশার দীর্ঘযাত্রা ত্রিশ বছরে শেষ হলোা। তবে পরিতাপের বিষয় এই ত্রিশ বছরে কোনোদিনই ফেয়ারচাইল্ড বলেননি তিনি অনুতপ্ত।

post
যুক্তরাষ্ট্র

ম্যানহাটানে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় আহত বাংলাদেশি

বিশ্বের রাজধানী খ্যাত নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটানে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় গুরুত্বর আহত হয়েছেন গোলাম মহিউদ্দিন নামে এক বাংলাদেশি। শত মাইল বেগে গাড়ি চালিয়ে ম্যানহাটানের ব্যস্ততম সড়কের ট্রাফিক লাইট অমান্য করে ইয়েলো ট্যাক্সিকে আঘাত করায় এই ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণে বাঁচলেও তার পাঁজরের ৮টি হাড় এবং বামের ঘাড়ের হাড়ও ভেঙ্গে গেছে।কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার রামপুরা গ্রামের সন্তান গোলাম মহিউদ্দিন বেলভ্যু হাসপাতালে ১ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতেও প্রায় অচেতন অবস্থায় ছিলেন। জানা গেছে ম্যানহাটানে রবিবার সকাল সাড়ে ৪টার দিকে হামজা সালমান (২৭) নামক ড্রাইভারের বেপরোয়া গতির গাড়িটিও ট্যাক্সিও মতই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ জানায়, গোলাম মহিউদ্দিনের গাড়িতে ধাক্কা দিয়ে প্রায় এক ব্লকের মত সামনে নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ফিফথ এভিনিউ এবং ৪৪ স্ট্রিট অতিক্রম করার সময় গোলাম মহিউদ্দিনের ট্যাক্সির পেছনে হামজার গাড়ি (নীল রংয়ের বিএমডব্লিউ-এম৫) ধাক্কা দিয়ে ৪৩ স্ট্রিট পর্যন্ত ছেচড়ে নেয়। এরপর ট্যাক্সিটির বাম পাশ (ড্রাইভার সীটের দিক) দুমড়ে-মুচড়ে গেলে আর সম্মুখে নেয়া সম্ভব হয়নি। সংবাদ পেয়েই এ্যাম্বুলেন্সসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয় এবং মুমূর্ষাবস্থায় গোলাম মহিউদ্দিনকে নিকটস্থ বেলভ্যু হাসপাতালে ভর্তি করেছে। হামজা দ্রুত কেটে পড়েছিলেন। তবে বেশী দূর যেতে পারেনি। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় কিছুক্ষণের মধ্যেই। মঙ্গলবার তাকে ম্যানহাটান ক্রিমিনাল কোর্টে হাজির করা হলে দোষ স্বীকার করে বলেছে যে, আমি রেড লাইটে থাকাবস্থায় ঐ ট্যাক্সিকে ধাক্কা দেই। তবে আমি ট্রাফিক লাইট অতিক্রমের সময় তা রেড ছিল না। ঠিক মধ্যখানে থাকাবস্থায় হলুদ ছিল। এবং ট্যাক্সিটি ছিল মাঝের লেনে। মঙ্গলবার আদালত হামজাকে জামিনে মুক্তি দেয়ায় গোলাম মহিউদ্দিনের স্ত্রী মাসুমা আকতার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, ‘এটা কী করে সম্ভব, বেপরোয়া চালককে তারা মুক্তি দিয়েছেন। আমার স্বামী হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। সে আমার স্বামীর ট্যাক্সি ভেঙ্গেছে, স্বামীকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। তিনি যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। আদৌ পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরতে পারবেন কিনা-তার নিশ্চয়তা নেই। অথচ লোকটিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে মাত্র একদিন হাজতে রাখার পর।’ মাসুমা আকতার উল্লেখ করেন, আমাদের ৭টি সন্তান রয়েছেন। সর্বকনিষ্ঠ সন্তানের বয়স মাত্র ৭ মাস। জ্যেষ্ঠ সন্তান ২১ বছরের। স্বামীর উপার্জনেই সংসার চলে। এখন কীভাবে সামলাবো পরিবারের বোঝা? মাসুমা বলেন, টানা ২৭ বছর যাবত ট্যাক্সি চালিয়ে পরিবার চালাচ্ছেন। কখনো এমন পরিস্থিতির শিকার হইনি। ট্যাক্সি মেডেলিয়ন নিজের হওয়ায় মোটামুটি ভালই চলছিল সবকিছু। এদিকে, কুমিল্লা সোসাইটির সভাপতি কাজী আসাদউল্লাহ এবং সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমান মিঠু মঙ্গলবার রাতে জানান, গোলাম মহিউদ্দিন খুব শান্ত মানুষ। রাতের শিফটে ট্যাক্সি চালান অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায়। শিফট শেষ করে ভোরে বাসায় ফেরার সময় এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন তিনি। এটি খুবই দুঃখজনক। তারা উভয়ে গোলাম মহিউদ্দিনের দ্রুত আরোগ্যে সকলের দোয়া চেয়েছেন। উল্লেখ্য, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গোলাম মহিউদ্দিন বাস করেন কুইন্সের ওজোনপার্কে। 

post
যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক সিটির উন্নয়নে বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে : মেয়র এডামস

নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক এডামস বলেছেন, আমেরিকা হচ্ছে এমন একটি দেশ যেখানে বসতি গড়তে হলে মাতৃভূমির মায়া-মমতা ত্যাগের প্রয়োজন হয় না। অর্থাৎ এ দেশটিকে নিজের মনে করতে পারলে প্রিয় মাতৃভূমিকে এখানেই নিয়ে আসা যায়। আমেরিকার মহাত্ম এভাবেই মহিমান্বিত হচ্ছে বহুজাতিক সমাজে নিজ নিজ সংস্কৃতির ধারা প্রবাহিত রাখার মধ্য দিয়ে। নিউইয়র্ক সিটির উন্নয়নে বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে।নিউইয়র্ক পুলিশে কর্মরত বাংলাদেশী-আমেরিকানদের সংগঠন ‘বাপা’র ষষ্ঠ বার্ষিক অ্যাওয়ার্ড ডিনার’ অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা তিনি এসব কথা বলেন। ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটস সংলগ্ন বিলাসবহুল একটি পার্টি হলে এই অনুষ্ঠান হয়।পুুলিশ বাহিনীতে কর্মরত বাংলাদেশী অফিসারদের প্রশংসাকালে মেয়র বলেন, আপনারা নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন বলেই এই সিটির জনজীবনকে নিরাপদ রাখা সম্ভব হচ্ছে। একইসাথে নিজ কম্যুনিটির সকলের প্রতি যাদে ভিন্ন কম্যুনিটির লোকজনের শ্রদ্ধাবোধ বাড়ে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।আর এভাবেই সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধন সুসংহত হলে বিশ্বের রাজধানী খ্যাত এই সিটির ইমেজ আরো উজ্জ্বল হবে। সিটি মেয়র বলেন, নিজের ভাষা, সংস্কৃতিকে কখনো ছোট ভাববেন না। তাহলে অনেক সমস্যার সহজ সমাধান হয়ে যায়। বিশেষ করে এদেশে বেড়ে উঠা অথবা জন্মগ্রহণকারি প্রজন্মও গৌরববোধ করবে তার মা-বাবার সমাজ নিয়ে।নিউইয়র্ক সিটিতে বহু ভাষা, বহুবর্ণ আর বহু জাতির মানুষ বাস করছে। সবকিছু মাড়িয়ে আমি খুব সহজেই বাংলাদেশী-আমেরিকানদের দেখতে পাই তাঁদের কর্মনিষ্ঠা আর আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হিসেবে।  বিশেষ সম্মানীত অতিথির বক্তব্যে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম বলেন, গৌরবে আমার বুকটা ভরে যায়, যখন এই সিটির নানা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে থেকে বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশনের সদস্যগণের ব্যাপারে ইতিবাচক মন্তব্য শুনি। সকলেই প্রশংসা করেন প্রতিটি পুলিশ অফিসারের কর্মনিষ্ঠা-দায়িত্ববোধের বিষয়ে। বাংলাদেশের একজন নাগরিক এবং কন্সাল জেনারেল হিসেবে এরচেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে।এজন্যে আমি বাপার প্রতিটি সদস্য-কর্মকর্তাকে অভিবাদন জানাচ্ছি।  কম্যুনিটির জনপ্রিয় দুই কণ্ঠশিল্পী রাজিব ও তৃণিয়া হাসানের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের পর বাপার (বাংলাদেশী আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশন) এই বর্ণাঢ্য ডিনারের সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও অ্যাওয়ার্ড বিতরণ পর্ব শুরু হয় সংগঠনের সভাপতি ক্যাপ্টেন করম চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। বাপার বোর্ড অব ট্রাস্টির সকলকে মঞ্চে ডেকে পরিচিতি পর্বের পর সমাপনী ভাষণ দেন বাপার ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এরশাদুর সিদ্দিক।  অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনদের মধ্যে ছিলেন কুইন্স ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এ্যাট লার্জ এটর্নী মঈন চৌধুরী, সিটি মেয়রের (এশিয়ান বিষয়ক) উপদেষ্টা ফাহাদ সোলায়মান, কম্যুনিটি লিডার গিয়াস আহমেদ, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর নুরুল আজিম, কম্যুনিটি লিডার মাহাবুবুর রহমান টুকু এবং ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, পিজি গ্রুপের সিইও পার্থগুপ্ত, ইউনাইটেড টেকনোলজি কোম্পানী ‘প্র্যাট এ্যান্ড হুইটনি’র সহযোগী পরিচালক মোহাম্মদ ইসলাম, এটর্নী মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, কাজী আজম, মাকসুদ চৌধুরী, ফিরোজ আলম প্রমুখ।  আগত অতিথিগণকে স্বাগত জানাতে ব্যস্ত ছিলেন বাপার মিডিয়া লিঁয়াজো জামিল সরোয়ার, কম্যুনিটি লিঁয়াজো মাহবুবুর জুয়েলসহ কর্মকর্তারা।

post
যুক্তরাষ্ট্র

নিউইয়র্কে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রবাসী নারীর মৃত্যু

নিউইয়র্কে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হুরুন্নাহার বেগম (৬২) নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশী মারা গেছেন।১৮ অক্টোবর নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে মাউন্টশিনাই হাসপাতালে মারা যান তিনি।১৯ অক্টোবর বুধবার জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার তার জানাযার সময় পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, ক্যান্সারে আক্রান্ত থাকা অবস্থায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন হুরুন্নাহার।এরপর তাকে ম্যানহাটানে মাউন্টশিনাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় কয়েকদিন আগে। সেখানেই তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেছেন। মৃত হুরুন্নাহারের বাড়ি বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ জেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের বাড়ৈ গ্রামে। হুরুন্নাহার নিউইয়র্কে বসবাসরত আফাজউদ্দিন আহমদের স্ত্রী। বছর খানেকের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আর কোন প্রবাসীর মৃত্যু হয়নি । হুরুন্নাহারের মৃত্যুতে কমিউনিটিতে করোনা নিয়ে পুনরায় আতংক দেখা দিয়েছে। তাকে লং আইল্যান্ড ওয়াশিংটন মেমরিয়্যাল পার্কে দাফন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৯, ২০২০ এবং ২০২১ সালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্ক সিটিসহ সারা আমেরিকায় ১২ শতাধিক প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে।

post
যুক্তরাষ্ট্র

নিউইয়র্কে চিকেন বিরিয়ানির পরিবর্তে অন্য খাবার সরবরাহ করায় বাংলাদেশি রেস্টুরেন্টে আগুন

এক গ্রাহক অর্ডার দিয়েছিলেন চিকেন বিরিয়ানি, কিন্তু তাকে অন্য খাবার সরবরাহ করা হয় বলে অভিযোগ। এতে বচসা হয় উভয়পক্ষের মধ্যে। এ ঘটনার পর বাংলাদেশি রেস্টুরেন্টে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক পোস্ট, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিরর ইউকেসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনায় চোফেল নরবু (৪৯) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি জ্যাকসন হাইটসে অবস্থিত ইত্তাদি গার্ডেন অ্যান্ড গ্রিল নামের রেস্টুরেন্টে আগুন দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে অগ্নিসংযোগ ও অপরাধমূলক অপকর্মের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি নিউ ইয়র্ক পোস্টকে বলেন, “আমি মাতাল ছিলাম। আমি চিকেন বিরিয়ানি অর্ডার দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাকে তা দেয়নি। পরে আমি তা ফেল দিই।” চোফেল নরবু বলেন, “আমি একটি গ্যাস ক্যান আনি এবং ওই রেস্টুরেন্টে ছুড়ে মারি। পরে আগুন ধরিয়ে দিই। এর পরে সেখানে বিস্ফোরণ হয়। কিছুটা আমার গায়েও লাগে।” এই পুরো ঘটনাটি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এবং নিউ ইয়র্কের দমকল বিভাগও এর একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ফুটেজে আগুন লাগানোর আগে নরবুকে রেস্টুরেন্টের বাইরে দাহ্য তরল ছুড়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। রাতে রেস্তোরাঁটি বন্ধ থাকায়, নরবু সেটির সাটারে তরলটি ছুড়ে মারেন। বাংলাদেশি রেস্টুরেন্টটি যুক্তরাষ্ট্রের কুইনসের জ্যাকসন হাইটসে অবস্থিত। এটি নিউইয়র্কের বাংলাদেশি অধুষ্যিত একটি এলাকা। সূত্র: নিউ ইয়র্ক পোস্ট, মিরর ইউকে, এনডিটিভি

post
যুক্তরাষ্ট্র

‘জয় বাংলা’ স্লোগান আর ‘আমরা সবাই রাজা’ সঙ্গিতের আবহে নিউইয়র্কে আরেকটি লিটল বাংলাদেশ

জয় বাংলা ধ্বনি আর ‘আমরা সবাই রাজা’ গানের সাথে লাল-সবুজের পতাকার আবহে বিশ্বের রাজধানী খ্যাত নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীনে ১৬ অক্টোবর রোববার বাঙালিদের এগিয়ে চলার অধ্যায়ে আরেকটি ইতিহাসের সংযোজন ঘটলো। সেটি হচ্ছে ‘লিটল বাংলাদেশ’। চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড ইন্টারসেকশনে বিপুল করতালি আর হর্ষধ্বনিতে এই সাইনের উম্মোচন করেন ৪ শতাধিক বছরের পুরনো নিউইয়র্ক সিটিতে সর্বপ্রথম নারী-মুসলমান ও বাংলাদেশী বংশোদ্ভ’ত কাউন্সিলওম্যান শাহানা হানিফ। এর ৮ মাস আগে অর্থাৎ এ বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এই সিটির জ্যামাইকায় হিলসাইড এভিনিউর বড় একটি অংশের নামকরণ করা হয়েছে ‘লিটল বাংলাদেশ’। এই সিটিতে বর্তমানে দু’লাখের বেশী বাংলাদেশী রয়েছেন। অনাড়ম্বর এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রবাসী ছাড়াও ছিলেন সিটির কম্পট্রোলার ব্র্যাড ল্যান্ডার, স্টেট এ্যাসেম্বলীম্যান রবার্ট ক্যারোল, নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম,ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এটর্নী মঈন চৌধুরী, ডেমক্র্যাটিক পার্টির ন্যাশনাল কমিটির সদস্য খোরশেদ খন্দকার প্রমুখ। লিটল বাংলাদেশ’র স্বপ্নদ্রষ্টাগণের অন্যতম কাউন্সিলওম্যান শাহানার বাবা মোহাম্মদ হানিফ (যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এবং উত্তর আমেরিকাস্থ চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি) এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে এ সংবাদদাতাকে বলেন, ১৯৯৫ সালের কথা। সে সময় আমরা কজন এই এলাকায় একটি অনুষ্ঠান থেকে ‘লিটল বাংলাদেশ’ রচনার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছিলাম। তারপর সেই স্বপ্নের পরিপূরক হিসেবে একই বছরে এ এলাকায় ‘লিটল বাংলাদেশ’ নামক একটি রেস্টুরেন্ট চালু করি। তার চলে গেছে ২৬টি বছর। আমার সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটলো আমারই কন্যা শাহানার হাত ধরে। আমি কত যে খুশী আর আনন্দিত-তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। আমি তার জন্যে গর্ববোধ করছি। নির্বাচিত হবার ১০ মাসের মধ্যে বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকাকে ‘লিটল বাংলাদেশ’-এ পরিণত করার আনন্দে অভিভূত শাহানা হানিফ বলেন, এটি আনন্দের এবং ঐতিহাসিক একটা দিন। কারণ, এই এলাকার নামকরণ হচ্ছে লিটল বাংলাদেশ। আমার তরফ থেকে এবং সিটি কাউন্সিলের তরফ থেকে কম্যুনিটির জন্যে এটি একটি উপহার। আমাদের যে সংগ্রাম অনেক বছর ধরে চলছিল, এখানে মাথা উঁচু করে থাকা,গড়ে উঠা, তার বাস্তবায়ন ঘটলো। আমার পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে, এই লিটল বাংলাদেশ ঘিরে আমাদের শিক্ষা, ন্যায্য মজুরি এবং গৃহায়নের যে ফাইট চলছে, তাকে শক্তিশালি করতে হবে এই নামকরণের আনন্দের মধ্য দিয়ে। ভবিষ্যত পরিকল্পনা প্রসঙ্গে শাহানা উল্লেখ করেন, একটা লেজিসলেশন(আইন) পাশ করার ইচ্ছা আছে, তা হচ্ছে এই সিটিতে কর্মস্থলে নিরাপদে কাজ এবং অসুস্থ হলে সবেতন ছুটির বিধি রয়েছে,সেটিকে সম্প্রসারণ করতে চাই। এটি করা সম্ভব হলে আমাদের যে ডেলিভারি (অধিকাংশই কাগজপত্রহীন এবং ইলেক্ট্রিক বাইকে রেস্টুরেন্টের খাবার সরবরাহ করেন) ভাইয়েরা আছেন, যারা কনট্রাক্ট বেইজ ওয়ার্কার, ডে লেবার,তারা কর্মস্থলে অসুস্থ হলে তাদেরকে সবেতন ছুটি মিলবে। এখন কিন্তু তারা সেটি পাচ্ছেন না। আমরা জানি যে, ডেলিভারিম্যানরা অত্যন্ত কঠোর শ্রম দিচ্ছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে খাদ্য-সামগ্রি পৌঁছাচ্ছেন। আমি সে সব কঠোর পরিশ্রমী মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করছি। এই এলাকার অর্থাৎ সিটি কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট-৩৯ এর সদ্য বিদায়ী কাউন্সিলম্যান থেকে সিটি কম্পট্রোলার হিসেবে বিজয়ী ব্র্যাড লেন্ডার প্রবাসীদের কর্মনিষ্ঠার প্রশংসা করে বলেন, আমি বেশ কয়েক টার্ম আপনাদের সান্নিধ্যে থেকেও এই এলাকার নামকরণ ‘লিটল বাংলাদেশ’ করতে পারিনি। আমার ছেড়ে দেয়া আসনে বিজয়ী শাহানা তা করে দেখালেন ১০ মাসের মধ্যেই। এভাবেই শাহানা দিপ্ত প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন আরো বড় গন্তব্যে,যার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশীদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটতে থাকবে। শুভেচ্ছা বক্তব্যে কন্সাল জেনারেল ড.মনিরুল ইসলাম বলেন, কাউন্সিলওম্যান এবং এই কাজে যারা জড়িত রয়েছেন তাদেরকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই এজন্যে যে, তারা নিজের প্রচেষ্টায় এই যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের অবস্থান তৈরী করে নিয়েছেন। তারা বাংলাদেশের পরিচয় বহন করছেন। আর এভাবেই এই বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের গুরুত্ব বাড়ছে, একটি উদিয়মান দেশ হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। এটি কিন্তু তারই সাক্ষ্য বহন করে। কন্সাল জেনারেল উল্লেখ করেন, আজকের দিনটি বিশেষভাবে আরো গুরুত্বপূর্ণ এজন্যে যে, আমরা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার সম্পর্কের ৫০ বছর পালন করছি। এরফলে ‘লিটল বাংলাদেশ’ সাইন ফলক উম্মোচনের এই অনুষ্ঠানটি নতুন মাত্রা পেয়েছে এবং নতুন ডাইমেনশন পেয়েছে। ড. সর্বস্তরের প্রবাসীগণকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে আরো বলেন, ‘তারা তাদের মেধা-মনন-সৃষ্টিশীলতা দিয়ে,কর্মদক্ষতা দিয়ে ভালো অবস্থান তৈরী করেছেন, সেজন্যে আমি মনে করি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো গভীর করার বিষয়ে আপনারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রাখছেন। গভীর সন্তোষ প্রকাশ করে ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এটর্নী মঈন চৌধুরী বললেন, ‘প্রবাসীদের জন্যে অত্যন্ত খুশীর এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে নিজেও গৌরববোধ করছি। আমরা প্রথম জেনারেশনের সদস্য হিসেবে যতটা সম্ভব চেষ্টা করছি, তবে বলতে দ্বিধা নেই যে, আমাদের সন্তানেরা অনেক ভাল করছেন বহুজাতিক এ সমাজে বাংলাদেশ আর বাঙালি কালচার উজ্জীবিত রাখতে। চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড এলাকাসহ ব্রুকলীনে কয়েক বছর আগেও লাখ খানেক প্রবাসী ছিলেন। এখন তা কমে হাজার পচিশেকে এসেছে। অন্যেরা পাড়ি জমিয়েছেন নিউইয়র্ক স্টেটের বাফেলো, কুইন্স ভিলেজ, ফিলাডেলফিয়া প্রভৃতি এলাকায়। যারা এখনও রয়েছেন তারা স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত এবং সকলেই সিটিজেনশিপ গ্রহণ করায় মূলধারায় কদর বেড়েছে। শাহানা হানিফের বিজয়ের মধ্যদিয়ে কম্যুনিটির গুরুত্বের পরিধি বিস্তৃত হয়েছে বলেই ‘লিটল বাংলাদেশ’ বিলটি উত্থাপনের পরই তা পাশ হয়। মার্কিন রাজনীতির সাথে প্রথম প্রজন্মের চেয়ে নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশী বংশোদ্ভ’তরা ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে পড়েছেন এবং এই অনুষ্ঠানে তেমনি একজন শিহাব চৌধুরী বক্তব্যের সময় ‘জয় বাংলা’ধ্বনিতে বাঙালির বিজয়ে এই আনন্দ প্রকাশ করেন।

post
যুক্তরাষ্ট্র

জবাবদিহিতার আওতায় না আনা পর্যন্ত র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে : যুক্তরাষ্ট্র

হাসিনার এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে ৪ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবকে সহায়তা বন্ধ করে।ওয়াশিংটনে গত বুধবার নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস এ কথা জানান।তিনি বলেন, 'বাস্তবতা হলো র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র‌্যাব মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত আছে, এমন বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে আমরা ২০১৮ সালেই র‌্যাবকে সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছি।'জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৬ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাব তৈরি করেছে, প্রশিক্ষণ দিয়েছে ও অস্ত্র সরবরাহ করেছে। তারা যেমন প্রশিক্ষণ দিয়েছে, র‍্যাব তাই করেছে।'সংবাদ ব্রিফিংয়ে নেড প্রাইস বলেন, 'প্রায় ৪ বছর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবকে সহায়তা বন্ধ করে দেয় এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে গত বছরের ডিসেম্বরে র‌্যাব ও এর ছয় বর্তমান-সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি আইনের অধীনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।''এছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত থাকার অভিযোগে আমরা র‍্যাবের দুই সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক আইনের অধীনে ব্যবস্থা নিয়েছি,' বলেন তিনি।নেড প্রাইস আরও বলেন, 'বাংলাদেশ হোক, দক্ষিণ এশিয়া বা বিশ্বের অন্য কোনো দেশ হোক, যুক্তরাষ্ট্র তার পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে মানবাধিকার। আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এ বিষয়টিতে দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি যারাই মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা নিই।'তিনি আরও বলেন, 'এই নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসা বিধিনিষেধের লক্ষ্য র‌্যাবের সংস্কার ও জবাবদিহির আওতায় আনা এবং বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধ করা।''আমরা দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার পাশাপাশি দেশগুলো যেন নিজস্ব উপায়ে অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই, ন্যায়বিচার নিশ্চিত এবং আইনের শাসন রক্ষা করতে পারে তার জন্য কাজ করে যাব। বাংলাদেশ নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময় আমরা এই নীতিগুলোকেই সামনে রেখেছি,' যোগ করেন তিনি।বাংলাদেশ সরকার বাকস্বাধীনতা এবং সংগঠনের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ করছে, এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে নেড প্রাইস জানান, সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সার্বজনীন অধিকারের ওপর আক্রমণের ক্ষেত্রে তার মন্তব্য একই।তিনি বলেন, 'জনগণ যে কোনো জায়গায় শান্তিপূর্ণভাবে ও আইনের শাসন মেনে বক্তব্য দেওয়ার এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমবেত হওয়ার অধিকার আছে।'র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে বাংলাদেশ বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে অবশ্য বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, 'জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং র‌্যাবের সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত তারা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে না।'

post
যুক্তরাষ্ট্র

এনআরবি সেমিনার নিউইয়র্কে, হুন্ডি ঠেকাতে রেমিট্যান্স-বোনাস ৫% করার আহবান

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের যে কোন ব্যাংকের পূর্ণাঙ্গ শাখা স্থাপন, প্রেরিত রেমিট্যান্সের ওপর বোনাসের পরিমাণ ২.৫% থেকে বাড়িয়ে ৫% করা, বিনিয়োগ-সম্পর্কিত রেমিটেন্সের বোনাস প্রদানের ব্যবস্থা করা হলে বৈধপথে রেমিটেন্সের প্রবাহ বাড়বে বলে মন্তব্য করা হলো নিউইয়র্কে এক সেমিনারে। একইসাথে ডলারের মূল্যমান সকল ক্ষেত্রে একই ধার্য করা হলেও হুন্ডির প্রবণতা হ্রাস পাবে বলে উল্লেখ করেন সচেতন প্রবাসীরা। এনআইডি কার্ডের বিকল্প হিসেবে পাসপোর্টকে নির্ধারণের দাবিটি পূরণ হলেও প্রবাসীদের বিনিয়োগের পথ সুগম হবে বলে উল্লেখ করেন কয়েকজন বক্তা।সেন্টার ফর এনআরবি’র ‘ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স সিরিজ-২০২২’র আওতায় ১২ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা : এনআরবির বিনিয়োগ এবং রেমিটেন্স প্রবাহ’ শীর্ষক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় কুইন্সে জয়া পার্টি হলে। সেন্টার ফর এনআরবির প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারপার্সন শেকিল চৌধুরির সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল ড. মো. মনিরুল ইসলাম। আলোচকগণের মধ্যে ছিলেন সোনালী এক্সচেঞ্জ কোম্পানীর সিইও দেবশ্রী মিত্র, বিশ্বব্যাপী মানি ট্রান্সফারস কোম্পানী ‘সানম্যান এক্সপ্রেস’র প্রেসিডেন্ট ও সিইও মাসুদ রানা তপন, ম্যাককুয়্যার ক্যাপিটল ইনকের কর্মকর্তা আদিব চৌধুরী, স্ট্যান্ডার্ড এক্সপ্রেসের সিইও মো. মালেক, সিলেটে বিপুল অর্থ বিনিয়োগকারি ফকু চৌধুরী, বাংলাদেশী আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা-প্রেসিডেন্ট লে. সুমন সাঈদ, কাতার থেকে আসা প্রবাসী বিনিয়োগকারি নূরল মোস্তফা, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী এবং শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আহসান হাবিব। অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন ইউএস বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট লিটন আহমেদ, লেখক-কবি-সাহিত্যিক ইশতিয়াক রুপু। কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম বলেছেন, সকলেই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের চিন্তা করছেন-এতে কোন সন্দেহ নেই। রেমিটেন্সের প্রবাহ ধরে রাখতে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান উচ্চারিত হলো তা আমি সময়ে সময়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ সমীপে উপস্থাপন করে আসছি। এ ধরনের আলোচনার সুফল অবশ্যই পাওয়া যাবে। কন্সাল জেনারেল উল্লেখ করেন, হন্ডি প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরী করতে সকলকে সরব থাকতে হবে। হুন্ডির মাধ্যমে সাময়িকভাবে লাভবান হওয়া গেলেও সেই অর্থ জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখে না। এমনকি ভবিষ্যতে সেই অর্থে বাংলাদেশে কোন কিছু করাও সম্ভব হবে না। কারন সেটি কাল টাকা হিসেবে চিহ্নিত হবে। হোস্ট শেকিল চৌধুরী উল্লেখ করেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ছাড়াও করোনায় গোটাবিশ্বের অর্থনীতিতে টালমাটাল অবস্থা। বাংলাদেশ তার বাইরে নেই। তবুও ডলারের মূল্যমানের যে ব্যবধান তা দূর করা সম্ভব হলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের গতি টেনে ধরা সম্ভব হবে। শেকিল চৌধুরী উল্লেখ করেন, সম্প্রতি লন্ডনের ৭ বিনিয়োগকারি বাংলাদেশে গিয়ে যে ধরনের পরিস্তিতির ভিকটিম হয়েছেন, তা প্রবাসে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে প্রশ্নের উদ্রেক করছে। এ পরিস্থিতির অবসানে সকলকে সততা ও নিষ্ঠাবান হতে হবে। সেমিনারের অন্যতম আলোচক লিটন আহমেদ তার লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, করোনাকালিন রেমিট্যান্স-প্রবাহের চেয়ে ভাটা পড়েছে গত কয়েক সপ্তাহে। এর কারণ হচ্ছে বৈধপথে প্রেরিত ডলারের বিনিময়ে গন্তব্যে পাওয়া যাচ্ছে ১০৭.৫০ টাকা। সাথে যোগ হয় বোনাসের আড়াই পার্সেন্ট। অর্থাৎ ১১০ টাকা। অপরদিকে হুন্ডিতে পাঠানো ডলারের দাম পাচ্ছে ১২০ টাকার মত। এজন্যে অনেকেই জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছেন। সোনালী ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রস্থ ‘সোনালী এক্সচেঞ্জে’র সিইও দেবশ্রী মিত্র ক্যাটাগরিকেলি উল্লেখ করেন, হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে পরবর্তীতে কেউ যদি সেই অর্থে শিল্প-করখানা গড়তে চান, তাহলে সেটি বুমেরাং হবে। কারণ, বৈধপথে অর্থ বিদেশ থেকে প্রেরণের ডক্যুমেন্ট ব্যতিত সরকারের অনুমোদন মিলবে না কখনোই। তাই সাময়িক লাভের আশায় নিজের ভবিষ্যত পরিকল্পনাকে ধুলিসাৎ করা উচিত নয়। বৈধপথে টাকা পাঠালেই পরবর্তীতে সে টাকায় স্বপ্নের ভবিষ্যত রচনা করা সম্ভব হবে। ইউএসবিসিআইয়ের পরিচালক শেখ ফরহাদ উল্লেখ করেছেন, অনেক প্রবাসী তার সন্তানদেরকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর দায়িত্ব দেন। সে সময় নতুন প্রজন্মের ওরা সোনালী এক্সচেঞ্জ কিংবা অন্য কোন বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানের অ্যাপস খুঁজে পায় না। ফলে তারা জুম অথবা অন্য কোন বিদেশী অ্যাপের ওপর ভরসা করে টাকা পাঠাচ্ছে। এ বিষয়টিকেও সংশ্লিষ্টদের নজরে রাখতে হবে। লেখক ইশাতিয়াক রুপু বলেন, সবকিছুর উর্দ্ধে প্রিয় মাতৃভ’মির স্বার্থেই আমাদেরকে হুন্ডি পরিহার করতে হবে। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এমন আলোচনার ভ’মিকা অপরিসীম বলে মন্তব্য করার পর মানি রেমিটেন্স প্রতিষ্ঠান ‘স্ট্যান্ডার্ড এক্সপ্রেস’র সিইও মো. মালেক উল্লেখ করেন, গত কয়েক বছরে সেন্টার ফর এনআরবি’র বেশ কয়েকটি সেমিনারে অংশ নিয়েছি। অনেকে অনেক কথা বলেছি। প্রবাসীদের সামগ্রিক কল্যাণের অভিপ্রায়ে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ মালাও তৈরী করা হয়েছে। কিন্তু একটিরও বাস্তবায়ন হতে দেখিনি। 

About Us

NRBC is an open news and tele video entertainment platform for non-residential Bengali network across the globe with no-business vision just to deliver news to the Bengali community.